parbattanews

চন্দ্রপাহাড় ঘিরে মহাষড়যন্ত্র

বান্দরবানের আলোচিত চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট ঘিরে শুরু হয়েছে মহাষড়যন্ত্র। পর্যটন-অর্থনীতির অপার সম্ভাবনার এই চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট তথা ‘ম্যারিয়ট’ তৈরিতে নানা কৌশলে বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছে পাহাড়ের একাধিক আঞ্চলিক সংগঠন। সেখানে কোনো ধরনের কোনো বসতি না থাকলেও ‘উপজাতিদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে’ বলে চালানো হচ্ছে ভয়ঙ্কর মিথ্যাচার।

এমনকি সরেজমিন যেখানে দেখা গেল মাত্র ২০ একর জায়গার ওপর যে রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে, সেখানেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলা হচ্ছে ১ হাজার একর জায়গার কথা! রোববার বান্দরবানের লামা উপজেলাধীন জীবননগরের আলোচিত চন্দ্রপাহাড় পরিদর্শনসহ স্থানীয় উপজাতি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ সময় সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকৃতি যেন তার আপন হাতেই সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ করেছে বান্দরবানের চন্দ্রপাহাড়কে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ফুট। এই পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে দেখা যায়, ওপরে বিস্তৃত নীল আকাশ আর নিচে সবুজের গালিচা। আশপাশের তুলনামূলক কম উচ্চতার পাহাড়গুলোর গায়ে লেগেছিল মেঘের ভেলা। খুব কাছেই রয়েছে বিখ্যাত নীলগিরি পাহাড় ও রিসোর্ট। তবে যে পাড়ার উপজাতি বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কথা বলে মিথ্যাচার করা হচ্ছে সেটির বাস্তব অবস্থা হলো চন্দ্রপাহাড়ের চারপাশে বেশ খানিকটা দূরে মোট চারটি পাড়া রয়েছে। সেগুলো হলো- দোলাপাড়া, কাপরুপাড়া, এরাপাড়া ও কালাইপাড়া।

রোববার চন্দ্রপাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে খালি চোখে কিছুটা অস্পষ্টভাবে সবচেয়ে নিকটবর্তী দুটি পাড়া বা মহল্লা দেখা যায়। অর্থাৎ চন্দ্রপাহাড় থেকে এসব বসতির দূরত্ব কত তা সহজেই অনুমান করা যায়। রোববার ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় ম্রো বা মুরং সম্প্রদায়ের স্থানীয় বেশকিছু বাসিন্দার সঙ্গে। কথা বলে জানা গেছে, তারা অতি সাধারণ মানুষ। তাদের চিন্তাচেতনাও সহজ-সরল। তারা অভাবী এবং শিক্ষার দিক থেকেও তুলনামূলক অনেক পিছিয়ে। এই উপজাতি বাসিন্দারা মূলত পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস (মূল) এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইসিপি) কূটকৌশলের শিকার হচ্ছে বারবার। অধিকাংশই ছদ্মনাম ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতিতে কথা বলে।

এ সময় তারা বলেন, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-মূল) চন্দ্রপাহাড়ের রিসোর্ট বাস্তবায়নে প্রধানভাবে বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। পেছন থেকে একশ্রেণির উপজাতিকে ভুল বুঝিয়ে মানববন্ধন ও বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। এর মূল কারণই হচ্ছে, পাহাড়ে একচ্ছত্র চাঁদাবাজি ও আধিপত্য ধরে রাখা। কেননা, এখানে আন্তর্জাতিক মানের এমন রিসোর্ট তৈরি হলে এখানে দেশি-বিদেশি প্রচুর পর্যটক আসবে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিচরণ বাড়বে, লোকসমাগম ও এলাকার ব্যাপক আধুনিকায়ন হলে স্বাভাবিকভাবে জেএসএসসহ (মূল) স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা কমে যেতে বাধ্য হবে।

রোববার কাপ্রুপাড়ায় গিয়ে কথা হয় স্থানীয় ম্রো সম্প্রদায়ের বাসিন্দা পিয়োং ম্রোর সঙ্গে। মারমা ভাষায় কথা বলে অভ্যস্ত হলেও অনুরোধে তিনি বাংলায় কথা বলেন। এ সময় পিয়োং ম্রো সময়ের আলোকে বলেন, ‘পেপার, বেসবুকসহ আমাদের পাহাড়ি কিছু লোকের মুখে শুনেছি ১ হাজার একর জমিতে হোটেল নির্মাণ করা হচ্ছে। পাহাড়িদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা এই চন্দ্রপাহাড়ে কখনই কাউকে বসবাস করতে দেখিনি। এটা এতটাই উচুঁ এবং দুর্গম ছিল যে, আমরা কেউই এদিকে আসার চিন্তাও করিনি। এখানে রিসোর্ট তৈরির কাজ শুরু হলে কৌতূহলেই একাধিকবার এসেছি। আর এসেই সব ধারণা পাল্টে গেছে। মাত্র ২০ একর জায়গার স্থলে এতদিন জেনে আসছিলাম হাজার একর।

কেউ কেউ বলেছে যে, পাহাড়ের জুম চাষ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হবে। কিন্তু এত উঁচুতে কখনও জুম চাষ করা হয় না। জুম চাষ মূলত ছোট পাহাড়ের গায়ে চাষাবাদ হয়ে থাকে। এই চন্দ্রপাহাড় নিয়ে মূলত আমাদের কিছু মানুষকে কাজে লাগিয়ে কোনো মহল স্বার্থ হাসিলের জন্য মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। রিসোর্টের বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে সবকিছুর নেপথ্যে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এই রিসোর্ট হলে আমরা স্থানীয় পাহাড়ি বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবো। তাই এই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

স্থানীয় মুরং কমান্ডার হিসেবে পরিচিত ম্যানথল মুরং বলেন, ‘আমরা সাধারণ পাহাড়িরা কোনো রক্তপাত বা সংঘর্ষ চাই না। আমরা চাই এলাকার উন্নয়ন, ভালো আয়-রোজগার। চন্দ্রপাহাড় নিয়ে মূলত পাহাড়ের স্বার্থান্বেষী এক বা একাধিক গোষ্ঠী নোংরা খেলায় নেমেছে। তাদের হয়ে আবার কাজ করছে ঢাকার কথিত কিছু বুদ্ধিজীবী। যদিও ঢাকার ওইসব বুদ্ধিজীবী কখনই সরেজমিন এই চন্দ্রপাহাড়ে আসেননি। তারা শিখিয়ে দেওয়া মতোই বলে যাচ্ছেন।’

ওই এলাকার বাসিন্দা ও বান্দরবান সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মেহ্লা সিং শুদ্ধভাবে বাংলায় সময়ের আলোকে বলেন, ‘বন্ধুদের উৎসাহে কিছুদিন আগে চন্দ্রপাহাড় বিরোধী একটি মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বিস্তারিত জেনে সেই ভুল থেকে বেরিয়ে আসি। কেননা আমরা লেখাপড়া শিখছি। এখানে আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট হলে নানা ক্ষেত্রেই আমাদের কর্মসংস্থান হবে। ওই রিসোর্ট ঘিরে আরও নানা খাতের উন্নয়ন হবে। আমাদের মধ্যে যারা অতি দরিদ্র আছে তারাও ভালো আয় করতে পারবে। তাই এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে হবে। চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটা বরং আশীর্বাদ।’

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, চন্দ্রপাহাড় রিসোর্টের সঙ্গে কেবল বান্দরবান নয়, গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের পর্যটন অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সে কারণে কোনো মহল নিজেদের স্বার্থে চন্দ্রপাহাড় রিসোর্টের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও এখানে আরেকটি বিষয় দেখা যায়, চিম্বুক পাহাড়ে ফাইভ স্টার মানের ‘সাইরো’ রিসোর্ট হয়েছে আরও বেশকিছু আগে। সেখানে প্রচুরসংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যটক বছরজুড়ে ভিড় জমিয়ে থাকে। এমনকি এখানে রুম পেতে গেলে এক মাস আগে বুকিং দিতে হচ্ছে। এই সাইরোর পাঁচজন মালিকের মধ্যে অন্যতমই একজন হলেন উপজাতি। তাই এই রিসোর্ট তৈরির সময় কোনো বাধা-বিপত্তির ঘটনা ঘটেনি। অথচ চন্দ্রপাহাড়ের ক্ষেত্রে তার উল্টোটি করা হচ্ছে। এটা মূলত একটি গোষ্ঠীর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে হচ্ছে বলেই আমাদের ধারণা।’

যেভাবে চলছে মিথ্যাচার: অপপ্রচার বা প্রপাগান্ডায় বলা হচ্ছে, বান্দরবান জেলার বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের ডান পাশে চিম্বুক পাহাড়ের কোলে ৩০২ নম্বর লুলাইং মৌজা এবং ৩০৫ নম্বর সেপ্রু মৌজায় কাপ্রুপাড়া, দোলাপাড়া, এরাপাড়া ও শোং নাম হুংপাড়ায় (যাকে চন্দ্রপাহাড় নামে পরিচিত করা হচ্ছে) অন্তত ১০ হাজার ম্রো জনগোষ্ঠীর বসবাস। অথচ সরেজমিন দেখা গেছে, ওই চন্দ্রপাহাড় এলাকায় মাত্র চারটি ম্রোপাড়া রয়েছে। চন্দ্রপাহাড়ের নিকটবর্তী পাড়াগুলো হলো- কাপ্রুপাড়া, দোলাপাড়া, কালাইপাড়া এবং এরাপাড়া। চন্দ্রপাহাড় থেকে কাপ্রুপাড়া উত্তর-পশ্চিমে সাড়ে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এবং এই পাড়ায় সর্বমোট ৪৮টি পরিবারের বসবাস ও মোট জনসংখ্যা ৩২০ জন। চন্দ্রপাহাড় থেকে দোলাপাড়া পূর্ব-দক্ষিণে আড়াই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এবং পাড়ায় সর্বমোট ২০টি পরিবারের বসবাস ও মোট জনসংখ্যা ১২০ জন।

অন্যদিকে চন্দ্রপাহাড় থেকে কালাইপাড়া পূর্বে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এবং এই পাড়ায় সর্বমোট ৩৭টি পরিবারের বসবাস ও মোট জনসংখ্যা ২৫০ জন। এ ছাড়া চন্দ্রপাহাড় থেকে এরাপাড়াও উত্তরে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এবং পাড়াটিতে সর্বমোট ১৯টি পরিবারের বসবাস, মোট জনসংখ্যা ১২৭ জন। অর্থাৎ বর্তমানে চন্দ্রপাহাড় এলাকার এই চারটি পাড়ায় সর্বমোট ১২৪টি পরিবারের জনসংখ্যা সর্বমোট ৮১৭ জন। এখানে পানির ছড়া বন্ধে ড্যাব নির্মাণের অপপ্রচার চালানো হলেও এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের অস্তিত্বও রোববার দেখা যায়নি। ফলে চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট তৈরির বিরুদ্ধে কী ভয়াবহভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে, তা সহজেই বোঝা যায়। সাধারণ ম্রো সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাই বলছেন, নিজেদের আধিপত্য ও চাঁদাবাজির স্বার্থে জেএসএস (মূল) এই চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, চন্দ্রপাহাড়ে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র তৈরির উদ্দেশ্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে ২০১৫ সালে ২০ একর তৃতীয় শ্রেণির ভূমি (দৈর্ঘ্য ৩৮০ মিটার এবং প্রস্থ ২১৩ মিটার) ৪০ বছরের জন্য বন্দোবস্তি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের পূর্বদিকে বান্দরবান-থানচি সড়ক, পশ্চিমদিকে নিচু পাহাড়, উত্তরদিকে পাহাড় ও দক্ষিণদিকে ৯০ ডিগ্রি পাহাড়ের ঢাল রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটির জমির পরিমাণ ২০ একর।

কথা বলে জানা গেছে, ম্রো জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর সেনাবাহিনী বা প্রশাসন দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলেও মিথ্যাচার করা হচ্ছে। সরেজমিন ম্রো সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রশাসন তথা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনোরূপ ভয়ভীতি প্রদর্শনের নজির নেই এখানে। বর্তমানে যে প্রতিবাদগুলো ম্রোদের বলে প্রচার করা হচ্ছে তার সবগুলোই বরং বিভিন্ন কুচক্রী ও স্বার্থান্বেষী মহলের। তারা নিজেদের স্বার্থেই ম্রো জনগোষ্ঠীকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শনের মাধ্যমে সংগঠিত করেছে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, সেনাবাহিনী ম্রোদের কল্যাণে আলীকদম উপজেলায় একটি মুরং হোস্টেল পরিচালনা করছে। এ ছাড়াও জেলা পরিষদের সহায়তায় বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক এলাকায় একটি ম্রো হোস্টেলসহ বিশেষ স্কুলের কাজ চলমান রয়েছে। উপরন্তু সেনাবাহিনী কর্তৃক ২০১৫ সালে আত্মসমর্পণকৃত মুরং বাহিনীর সদস্যদের পুনর্বাসন এবং তাদের নামে থাকা বিভিন্ন মামলা থেকে অব্যাহতির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, চুক্তি অনুযায়ী স্থাপনা নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট ভূমি উন্নয়নে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না। পর্যটন শিল্প পরিচালনায় ও ব্যবস্থাপনায় জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রকৃতি ঠিক রেখে উন্নত নির্মাণশৈলীর আদলে রিসোর্ট তৈরি করা হবে। এ জায়গাটিতে কোনো রাস্তাঘাট, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ তথা কোনো নাগরিক সুবিধা নেই। এ কারণে চন্দ্রপাহাড়ে কোনো মানুষ বসবাস করেনি। ওই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হলে পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। বরং জীবনমান হবে অনেক আধুনিক। বর্তমানে চন্দ্রপাহাড় রিসোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন স্থাপন, প্রয়োজনীয় রাস্তাসহ আনুষঙ্গিক নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে।

Exit mobile version