parbattanews

চরম ঝুঁকিতে উজানটিয়া জেটিঘাট

 

পেকুয়া প্রতিনিধি:

সাম্প্রতিক টানা বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে দেবে গেছে পেকুয়ার জনগুরুত্বপূর্ণ উজানটিয়া জেটিঘাট। এতে ঘাটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। স্থাণীয়রা আশঙ্কা করছেন যেকোন মুহুর্তে নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে যেতে পারে পুরো ঘাটটি। স্থাণীয়ভাবে এটি করিমদাদ মিয়ার ঘাট হিসেবেও পরিচিত।

সরেজমিনে ঘাটটি পরিদর্শনে গেলে স্থানীয়রা জানান ১৯৯৫ সালে উজানটিয়া ইউনিয়নবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ এলজিইডির মাধ্যমে ঘাটটি নির্মাণ করেন। এরপর থেকে মহেশখালী সোনাদিয়া সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ি, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মগনামায় নির্মিতব্য সাবমেরিন ঘাঁটি ও করিয়ারদিয়া মৎস্য প্রজেক্ট সহ বিভিন্ন স্থানে যাতাযাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘাটটি।

সম্প্রতি মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনেক মালামাল ও দেধি বিদেশি প্রকৌশলীরা পারাপারে এ ঘাট ব্যবহার করছেন। তাছাড়া করিয়ারদিয়া ও উজানটিয়া উৎপাদিত লবণ ও মৎস্য এ ঘাট দিয়েই নদীপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। উজানটিয়া ইউনিয়নের ফেরাশিঙ্গা পাড়া এলাকার লবণ চাষী মোহাম্মদ হোসেন ও মিয়াপাড়া এলাকার নুরুল হোছাইন জানান করিম দাদ মিয়ার ঘাট দিয়ে উজানটিয়ার সম্স্ত লবণ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।

কিছুদিন আগে জোয়ারের স্রোতে ঘাটের কয়েকটি পিলার দেবে গিয়ে এটি চরম ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে আমরা লবণ চাষীরা বিপদে পড়ে যাব। ফেরাশিঙ্গা পাড়া এলাকার চিংড়ি চাষী মঈনুদ্দিন, আবদুল হাকেম, পশ্চিম উজানটিয়া গ্রামের সাদেক, আলা উদ্দিন, মিয়াপাড়া এলাকার নেজাম উদ্দিন, আশেক, আব্দুল হাকিম, নতুন পাড়ার ওয়াজেদ, সুমন, আব্দুল্লাহসহ আরো অনেকই জানান, করিয়ারদিয়া ও বদরখালীসহ বিভিন্ন বড় বড় মৎস্য প্রজেক্টেও হাজার হাজার কর্মীর যাতায়াত এ ঘাট দিয়ে। তাছাড়া উৎপাদিত চিংড়ি মাছ এ ঘাট দিয়ে বোটে তোলা হয়। স্থাণীয় মৎস্য প্রজেক্টের মালিক ও মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম এম ইউপি, নেজাম উদ্দিন, সাবেক এমইউপি এহসান ও মুফিজুর রহমানসহ আরো অনেকেই জানান, ঘাটের ৩টি পিলার মাতামহুরীর তীব্র স্রোতে দেবে গেছে।

যার ফলে ঘাটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই নদীর স্রোতে পুরো ঘাটটি ভেসে যাবে। আমরা দ্রুত ঘাটটি সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। শীঘ্রই এটির সংস্কার না হলে বাকী অংশও দ্রুত নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এতে পেকুয়ার মৎস্য শিল্পে বিরুপ প্রভাব পড়বে বলেও জানান তারা। লবণ ও চিংড়ি ব্যবসায়ী উজানটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম চৌধুরী মিন্টু জানান মহেশখালী সোনাদিয়া বন্দও মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, করিয়ারদিয়া চিংড়ি জোনের যাতায়াত ছাড়াও এ ঘাটটি এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এখানে বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য প্রতিদিন বিকেলে কয়েকশ দর্শনাথী আসেন। তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ এ জেটিঘাটটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান। ঘাটে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মুজিবুল হক চৌং ও দেলোয়ার হোসেনসহ আরো অনেকেই জানান, ঘাটের পূর্ব অংশের বেশ কয়েকটি পিলার দেবে গিয়ে ঘাটটি এখন নড়বড় হয়েছে। এতে দর্শনার্থীরা আতঙ্কে  আছেন তেমনি পারাপারেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদুল আলম চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি জানান পিলার দেবে গিয়ে ঘাটের পূর্ব পাশের সিঁড়িটা দেবে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আমি কয়েকদিনের মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তারপর যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ইতিমধ্যে ঘাটটি পরিদর্শন করে যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে এলজিইডিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Exit mobile version