চাকমা, মারমা, ত্রিপুরারা ভারতীয় বংশোদ্ভূত!

kk

ডেস্ক নিউজ:

মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা নৃ-গোষ্ঠী ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ভারতের উত্তরপূর্বাংশ বা দক্ষিণপূর্ব এশীয় তিব্বতি-বার্মা ভাষীদের চেয়ে তিব্বতি-বার্মা ভাষাভাষী এসব বাংলাদেশিদের মধ্যে ভারতের মূল ভূখণ্ডের উচ্চভূমিতে বসবাসকারী ভারতীয়দের পূর্বপুরুষদের যথেষ্ট উপাদান বিদ্যমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) ও সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি (সিসিএমবি) এর একটি যৌথ গবেষণায় এ তথ্য  বেরিয়ে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নুরুন নাহার গাজী সুলতানা ও   সিএসআইআরের কুমারাস্বামী থাঙ্গারাজের নেতৃত্বাধীন এ গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘পিএলওএস ওয়ান’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

সিএসআইআর-সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলেকিউলার বায়োলজি (সিসিএমবি)-এর কুমারাস্বামী থাঙ্গারাজ বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা) বংশগতি নিয়ে বিস্তর বিশ্লেষণ চালিয়েছি যারা তিব্বতি-বার্মা ভাষা বর্গের একটি  শাখা ভাষা কথা বলেন। ভারত ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বসবাসকারী তিব্বতি-বার্মাভাষীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে তাদের তথ্যের তুলনা করেছি। আমরা দেখতে পেয়েছি যে, ভারতের উত্তরপূর্বাংশ বা দক্ষিণপূর্ব এশীয় তিব্বতি-বার্মা ভাষীদের চেয়ে তিব্বতি-বার্মা ভাষাভাষী এসব বাংলাদেশিদের মধ্যে ভারতের মূল ভূখণ্ডের উচ্চভূমিতে বসবাসকারী ভারতীয়দের পূর্বপুরুষদের যথেষ্ট উপাদান তাদের মধ্যে বিদ্যমান।

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, সিনো-তিব্বতীয় ভাষা পরিবারের একটি ভাষা হচ্ছে তিব্বতো-বার্মা ভাষা। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার উচুভূমিতে ও মায়ানমারের (পূর্বে বার্মা নামে পরিচিত ছিল) নিম্নভূমিতে তিব্বতো-বার্মা বর্গের ৪০০টি ভাষা প্রচলিত। প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ বার্মিজ ভাষায় ও ৮০ লাখ মানুষ তিব্বতি ভাষা কথা বলে।

নুরুন নাহার ‍গাজী সুলতানা ও থাঙ্গারাজের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো বংশগতির সকল উপাদান (মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ, ওয়াই ক্রোমোজোম ও অটোজম) ব্যবহার করে বাংলাদেশের নৃ-গোষ্ঠীগুলোর উদ্ভব ও সাদৃশ্যে নিয়ে গবেষণা চালালেন।

বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পূর্ব ভারত, উত্তর ও পূর্বাঞ্চল উত্তরপূর্ব ভারত দিয়ে ঘেরা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল কিছুটা মায়ানমারের সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া। কুমারাস্বামী থাঙ্গারাজ বলেন, বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থানই তুলে ধরে যে, এটি (বাংলাদেশ) ভাষা সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল।

তিনি জানান, বাংলাদেশের চতুর্দিকে বাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর পুরোপুরিভাবে গবেষণা চালানো হলেও উপকূল ও চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠীগুলোর উদ্ভব ও সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চালানো হয়নি। ভারত ও মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসব নৃ-গোষ্ঠীর স্থানান্তর সম্পর্কেও বলা হয়েছে তাদের গবেষণায়।

দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশীয় জনগণের ওপর চালানো বংশগতি গবেষণাটিতে দেখা গেছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া থেকে ভারতে খুব সম্প্রতি তিব্বতো-বার্মাভাষীদের বিস্তরণ হয়েছে।

সূত্র: বাংলানিউজ

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উপজাতি, চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন