parbattanews

চাকরি দেয়ার নামে ঘুষ: রামগড়ে বিজিবি’র মার্শাল ল কোর্টে এক সিপাই’র ৬ মাসের কারাদণ্ড


রামগড় প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির রামগড়স্থ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র ৪৩ ব্যাটালিয়নের এক হাবিলদার ও এক সিপাই’র বিরুদ্ধে বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নামে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে মার্শাল ল কোর্টে বিচার হচ্ছে। বৃহষ্পতিবার ২৩ নভেম্বর অভিযুক্ত সিপাই বিকাশ কুমারকে চাকরিচ্যুত এবং মার্শাল ল কোর্ট  ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আগামী রবিবার  মার্শাল ল কোর্টে অপর অভিযুক্ত হাবিলদার আব্দুল মালেকের বিচার হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, ৪৩ বিজিবি’র  হাবিলদার আব্দুল মালেক (নম্বর ৫০৬১০) ও সিপাই বিকাশ কুমারের(নম্বর ৮২৩৮০) বিরুদ্ধে বিজিবিতে বেসামরিক পদে চাকরি দেয়ার নামে নওগাঁ জেলার বাগবাড়িয়া গ্রামের সুকুমার সরকারের ছেলে নিশি কান্ত ও একই জেলার মহাদেবপুরের উত্তর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকার ঘুষ নেন। ৪৩ ব্যাটালিয়ন নওগাঁ থাকাকালীন সময়ে ২০১৫ সালে বিজিবি’র ওই দু’সদস্য তাদের কাছ থেকে এ ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু  তারা চাকরি  না পেয়ে টাকা ফেরৎ চাইলে বিজিবি’র দু’সদস্য ঐ টাকাও ফেরৎ দিতে গরিমসি করেন। ২০১৬ সালের শেষার্ধে ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন নওগাঁ থেকে রামগড়ে বদলী হয়ে আসে।

অন্যদিকে গত ৮ অক্টোবর নিশি কান্ত ও ইদ্রিস আলী রামগড়ে এসে ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কাছে বিজিবির ঐ দু’সদস্যর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের লিখিত অভিযোগ করেন।  নিশি কান্ত বলেন, তাকে অফিস সহায়ক এবং ইদ্রিস আলীকে কুক পদে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে দুজনের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন বিজিবির হাবিলদার আব্দুল মালেক ও সিপাই বিকাশ কুমার।  চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরৎ চাইলে এক লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার ফেরৎ দেয়া হয় তাদের। কিন্তু অবশিষ্ট টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা রামগড়ে এসে ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা এবং অভিযুক্ত বিজিবি’র দু’সদস্যের স্বীকারোক্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি’র আইন অনুযায়ী তাদের মার্শাল ল কোর্টে বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সূত্র  আরো জানায়, বিজিবির অভিযুক্ত দু’সদস্যের কাছ থেকে ঘুষের ৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বৃহষ্পতিবার অভিযুুক্ত সিপাই বিকাশ কুমারকে চাকরিচ্যুত করার পর ব্যাটালিয়নে স্থাপিত মার্শাল ল কোর্টে বিচার করা হয়। কোর্ট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন- ২০১০-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযুক্ত সিপাই বিকাশ কুমারকে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। কোর্টের বিচারক ছিলেন ৪৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম জাহিদুর রশীদ পিএসসি। তাঁকে সাহায়তা করেন মেজর মো. হুমায়ুন কবির। রায় ঘোষণার পর সিপাই বিকাশ কুমারকে বিজিবি’র প্রহরায় খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আগামী রবিবার অভিযুক্ত অপর বিজিবি সদস্য হাবিলদার আব্দুল মালেকের বিচার হবে  মার্শাল ল কোর্টে।

এদিকে, ঘুষ দেয়ার অপরাধে নিশি কান্ত এবং ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধেও আইনী ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহষ্পতিবার  বিকালে উদ্ধারকৃত ঘুষের ৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকাসহ  নিশি কান্ত ও ইদ্রিস আলীকে  রামগড় থানায় সোপর্দ কর হয়। কিন্তু ঘুষের টাকা লেনদেনের স্থান নওগাঁ হওয়ায় রামগড় থানায় মামলা রুজু করা যায়নি। বিজিবি তাদেরকে এখন  নওগাঁর সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করে মামলা দায়ের করবে বলে জানাগেছে।

Exit mobile version