parbattanews

চিকিৎসকের ভুলের মাশুল দিলেন ক্রিকেটার শহিদুল

মূত্রের নমুনা পরীক্ষায় ওয়াডার নিষিদ্ধ বস্তু ক্লোমিফেনের উপস্থিতি পাওয়ায় শাস্তি পেয়েছেন বাংলাদেশে পেসার শহিদুল ইসলাম। ২৭ বছর বয়সী এই পেসারকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ১০ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সময় আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া, কোনো ধরণেই প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এ নিষিদ্ধ ওষুধ তিনি গ্রহণ করেননি। বরং চিকিৎসকের ভুল পরামর্শই কাল হয়েছে তার। বিসিবিকে না জানিয়ে ব্যক্তিগত সমস্যায় চিকিৎসকের ওষুধ গ্রহণ করতে গিয়ে ওয়াডার আইনে নিষিদ্ধ এমন উপাদান প্রবেশ করেছে তার শরীরে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মেডিক্যাল বিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, তাদের না জানিয়েই ব্যক্তিগতভাবে অন্য চিকিৎসকের পরামর্শে এই ওষুধ গ্রহণ করেছেন তিনি।

জানা গেছে, একটি ব্যক্তিগত সমস্যায় শহিদুল বিসিবির চিকিৎসকদের বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছাতেই এক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সে সময়ে সেই চিকিৎসক তাকে জানিয়েছিলেন সেসব ওষুধ গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না এবং তা বৈধ। তাই তিনিও আর বিসিবির চিকিৎসকদের বিষয়টি জানাননি।

বিসিবির এক বোর্ড সদস্য জানিয়েছেন, প্রতিটি আন্তর্জাতিক সিরিজ বা টুর্নামেন্টের আগেই খেলোয়াড়েদের বোর্ডের মেডিক্যাল বিভাগ ডোপিং নিয়ে সচেতন করে থাকেন। তবে শহিদুল ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে হয়তো বিসিবির চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করেনি। বরং যে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন, সে স্পোর্টস ফিজিশিয়ান না হওয়ায় বুঝতে পারেননি ওষুধটা নিষিদ্ধ হতে পারে।

বোর্ডের সেই সদস্যের থেকে আরো জানা গেছে, গত মার্চে একটি সিরিজের আগে যখন ডোপ টেস্ট হয়েছিল তখন শহিদুল নিজেই আইসিসির প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছিল। তিনি বুঝতেই পারেননি এখানে ডোপিং নিয়ে কোনো বিষয় থাকতে পারে। তবে আগে থেকেই নিজের চিকিৎসা ও গ্রহণ করা ওষুধের তালিকা জানানোয় আইসিসি বিষয়টি নমনীয়ভাবে নিয়ে তাকে সর্বনিম্ন সাজা দিয়েছে।

আইসিসি জানিয়েছে, শহীদুলের মূত্রের নমুনা পরীক্ষায় ওয়াডার নিষিদ্ধ বস্তু ক্লোমিফেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা জানিয়েছে, ওষুধ আকারে এই নিষিদ্ধ বস্তু অনিচ্ছাকৃতভাবে শরীরে প্রবেশ করান শহীদুল। সাধারণত এটা থেরাপির জন্য চিকিৎসকরা ব্যবহারের পরামর্শ দেন। শহীদুলও জানিয়েছে, পারফরম্যান্স বর্ধক হিসেবে এটি ব্যবহার করেননি তিনি।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চোটের সাথে লড়ছিলেন শহিদুল। চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির স্কোয়াডেও নাম ছিল তার। কিন্তু সাইড স্ট্রেইনের চোটের কারণে শেষ মুহূর্তে ছিটকে পড়েন।

এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে স্কোয়াডে ছিলেন শহিদুল ইসলাম কিন্তু কোনো ম্যাচেই খেলা হয়নি তার। প্রথম টেস্টে শরিফুল ইসলাম ইনজুরিতে পড়লে দ্বিতীয় টেস্টে দল আস্থা রাখে এবাদত ও খালেদের ওপর। তবে ঢাকা টেস্টেই বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন শহিদুল। নেমেই পেয়েছেন চোট। সেই চোটেই ক্যারিবিয়ান স্বপ্নভঙ্গ হয় তার।

শহিদুলের আগে সর্বশেষ নিষিদ্ধ দ্রব্য গ্রহণের অভিযোগে আইসিসি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার যুবায়ের হামজাকে ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তিনিও ভুলক্রমে নিষিদ্ধ ওষুধ খেয়ে ফেলেছিলেন।

বাংলাদেশে এর আগে নিষিদ্ধ দ্রব্য গ্রহণের অভিযোগে অনিক ইসলাম নামে এক ক্রিকেটারকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি।

Exit mobile version