parbattanews

ছন্দ ও গানের সাথে বেচেঁ থাকতে চান অপু বড়ুয়া

16904768_1262507343803429_3295876947329055697_o (2) copy

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

সাহিত্য ও সঙ্গীতাঙ্গনে এক পরিচিত নাম অপু বড়ুয়া। ছন্দ আর গানের সাথে তার পথচলা সেই ছোটবেলা থেকে। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত গীতিকার ও সুর সংগীত পরিচালক তিনি। আশির দশকের শেষের দিকে তিনি দৈনিক বাংলার বাণী দিয়ে সাংবাদিকতায় সম্পৃক্ত হন। সুর বুনতে বুনতে এগিয়ে এসেছেন অনেকটা দূর। তার আরও একটি পরিচয় হলো বর্তমানে তিনি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বিএসসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত রয়েছেন। বাবা অনন্ত মোহন বড়ুয়া ও মা শাচী রাণী বড়ুয়া উভয়েই অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজিবী। স্ত্রী পাপড়ী বড়ুয়া উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। চট্টগ্রামের বাশখালীর জলদী গ্রামে জম্ম অপু বড়ুয়ার। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে অপু বড়ুয়া সর্ব কনিষ্ট। কক্সবাজারের রামুতে বেড়ে উঠা অপু বড়ুয়া কবি অমিত বড়ুয়ার হাত ধরে লেখা লেখিতে সম্পৃক্ত হন।

তিনি সিলেটে শ্রেষ্ঠ ছড়াকারের পুরষ্কারসহ চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত শিশুকিশোর মাসিক পত্রিকা কথনের উদ্যোগে ছড়া সাহিত্যে পুরষ্কার পান। অপু বড়ুয়া এ পর্যন্ত অন্তত দুইশতাধিক গান লিখেছেন। ক্লোজআপ তারকা সালমার গলায় গাওয়া ও বন্ধু বন্ধুরে আস্স্য তুই আরো বাড়ি ও কক্সবাজারে, মনির খানের গলায় গাওয়া ”আমার অন্তর ভাইঙ্গা গড় তুমি….গড় কার অন্তর” এসকল বিখ্যাত গানসহ দেশের তারকা শিল্পীদের মধ্যে রবি চৌধুরী, শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব, শেফালী ঘোষ, হেড মাষ্টার খ্যাত সিরাজ, তাপস বড়ুয়া, দীপক আর্চায্য, মানস পাল, বিভাস সেন গুপ্ত, মানসী বড়ুয়া, আবীর বড়ুয়া, স্বরণ বড়ুয়াসহ অনেকে তার লেখা গান গেয়েছেন।

এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য। ১৯৯১ সনের শেষের দিকে প্রকাশিত হয় তার আকাশে রঙ্গিন ঘুড়ি, যুগল বন্দি প্রেম, কক্সবাজারের ছড়া এ্যালবাম, আয়রে ছুটে আয় প্রিয় জলদী গাঁয়, রঙের তুলি কর্ণফুলী, আকাঁর ভাষা লেখার ভাষা, ছড়া ছন্দে মনের কথা, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান সংকলিত, শৈলী ও পরীর গল্প, পেত্নী ভূতের কাণ্ড, নি:সঙ্গ বাউলসহ  মোট ১২টি বই প্রকাশিত হয়েছে।

সম্প্রতি আলাপচারিতায় ছড়াকার অপু বড়ুয়া বলেন, দেশে বর্তমানে প্রকৃত গান আর প্রকৃত সুরের যথেষ্ট অভাব আছে। প্রকৃত মানুষরা প্রকৃত কাজ না করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।

সুরে সুরে তিনি বলেন, পাশের বাড়ির ভাড়াটে/জাপান থেকে আসল শিখে কংফু এবং কারাতে বা তার ছোট ভাই ঈসমাইল ভোর সকালে খালি পায়ে হাটতে পারে বিশ মাইল…. এমন আট লাইনের ছড়া লিখে যদি ২-৫শ টাকা পায় তাহলে গীতিকার কেন গান লিখবে? সেই মান্ধাতা আমলের গানের মূল্য এখনো রয়েছে। যার কারণে নতুন নতুন গানের জন্য গীতিকার সৃষ্টি হচ্ছেনা। বর্তমানে একজন ছড়াকার যদি একটি ছড়া লিখে ১-২শ টাকা পায়। তাহলে একজন গীতিকার স্থায়ী, অন্তরা, সঞ্চারী ও আবেগ মিল রেখে একটি পূর্ণাঙ্গ গান সুর করার পর শিল্পী যখন সেই গান গাইবে এবং রেডিওতে প্রচার হলে তালিকাভুক্ত ওই গীতিকার গ্রেড অনুযায়ী নামে মাত্র সম্মানী পেয়ে থাকে।

দু:খ প্রকাশ করে গীতিকার ও সুর সংগীত পরিচালক অপু বড়ুয়া আরও বলেন, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের খ্যাতিমান গীতিকার-সুরকার সৈয়দ মহিউদ্দিন। তার লেখা ও সুরে গান গেয়েই জনপ্রিয় হয়েছেন শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব, শেফালি ঘোষসহ অনেক শিল্পী। কিন্তু দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সৈয়দ মহিউদ্দিনের দিন কাটছে অসহায় অবস্থায়। ঊর্ধ্বতন মহল তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। তারপরও আমি শ্রদ্ধা জানাই রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব সম্পদ বড়ুয়াকে। তিনিই প্রথম সৈয়দ মহিউদ্দিনের খবর নিয়েছেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। লোকসঙ্গীত শিল্পী ও গীতিকার আবদুল গফুর হালি আর্থিক অসচ্ছলতার মধ্যে থেকে মৃত্যু বরণ করেছেন। আসলে শিল্পী, সাংবাদিক সারাজীবন সমাজের জন্য দিয়ে যাচ্ছে বিনিময় পাচ্ছেনা কিছু। তারপরও যতদিন বেঁচে থাকব, ছন্দের পাশাপাশি বেচেঁ থাকতে চাই গানের সাথে এমনটি জানিয়েছেন অপু বড়ুয়া।

Exit mobile version