ছাব্বিশ বছরে স্বপ্ন পূরণ

fec-image

শাহানা ও আবদুল হামিদ আপন ভাই-বোন। দুই ভাই-বোনকে দেখতে শিশু মনে হলেও আসলে তারা প্রাপ্ত বয়স্ক। শাহানার বয়স ছাব্বিশ আর আবদুল হামিদের বয়স একুশ। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তাদের শারিরীক গঠন ও মানসিক পরিবর্তন। তাই এ বয়সেও তাদের চড়তে হয় মায়ের কোলে। শাহানা অল্প চলাফেরা করতে পারলেও হামিদ চলতে ফিরতে পারেনা। মায়ের কোলেই তার শেষ ভরসা। যেখানে বসিয়ে রাখেন সেখান থেকে নড়া চড়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান মা হামিদা বেগম।

পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র (দাখিল) মাদ্রাসার পাশেই হামিদা বেগম ও আবদুল আলী দম্পত্তির বাড়ি। তাদের সন্তান শাহানা ও হামিদ। বাবা-মা দু’জনে শারিরীকভাবে সুস্থ হলেও সন্তান দুটো জন্ম নিয়েছে শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়ে। মায়ের কোলে চড়ে আসা-যাওয়া করে হামিদ পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পাশ করেছে। চলাফেরা করতে না পারায় বাড়ির আশ-পাশে হুইল চেয়ারে বসে ঘুরবেন এমন ইচ্ছা দুই ভাই-বোনের। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে ছাব্বিশ বছরেও এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি।

অবশেষে হুইল চেয়ার উপহার দেন পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) লোগাং জোন। জনকল্যাণমুলক কর্মসূচীর আওতায় তাদের বাবা আবদুল আলীর হাতে তুলে দেয়া হয় মানসম্পন্ন একটি হুইল চেয়ার। পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) এবং লোগাং জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল মো: মফিজুর রহমান ভূঁইয়া তাদের বাবা আবদুল আলীকে চেয়ারে বসিয়ে হুইল চেয়ারটি হস্তান্তর করেন। এতে ছাব্বিশ বছরের স্বপ্ন পূরণ হয় প্রতিবন্ধী দুই ভাই ও বোনের । যা হাতে পেয়ে পরিবারের সবাই খুশীতে আত্মহারা। আবদুল হামিদ মনের সুখে হুইল চেয়ারে বসলে মা হামিদা ছুটে আসে চালকের আসনে। বাঁশ ঝাড়ের নিচে ছোট্ট আঙিনার এপার-ওপার ভাই-বোন চড়ে বেড়ায় হুইল চেয়ারে।

হামিদা ও আবদুল আলীবিজিবি’র স্যার আমার বাচ্চাদের জন্য হুইল চেয়ার দিয়েছে। বাচ্চারা হুইল চেয়ারে চড়ে খুব আনন্দ পাচ্ছে। তিনি বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা জানান।

প্রতিবেশী মো: মানিক জানান, বিজিবি থেকে হুইল চেয়ারটি দিয়েছে তার জন্য আমরা এলাকাবাসী খুব খুশী। অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিজিবিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রতিবেশী ও বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল কাশেম বলেন, প্রতিবন্ধী পরিবারটি আমার বাড়ির পাশেই। দু’জনকে লালন-পালন করতে ওদের মায়ের অনেক কষ্ট হতো। বিজিবি’র পক্ষ থেকে একটি হুইল চেয়ার দেয়াতে মায়ের কষ্ট কমেছে। প্রতিবেশীর পক্ষ থেকে তিনি বিজিবি’কে ধন্যবাদ জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন