parbattanews

জাতীয়করণের দাবিতে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

SCHOOL PIC copy

পানছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত পানছড়ি উপজেলায় উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা মোট ৮টি। তম্মধ্যে উপজেলা সদরের সবচেয়ে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে সকল সম্প্রদায় মিলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় এক হাজার তিনশ’।

১৯৮০সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দিয়ে আসছে অভাবনীয় সাফল্য। ৮ম শ্রেণীর বৃত্তি ও এসএসসিতে ভালো ফলাফলে শিক্ষকদের অপরিসীম ভূমিকার কথা সব সময় জনমনে। কিন্তু এত সাফল্যভরা এই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ নিয়ে বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মাঝে বিরাজ করছে ধুম্রজাল। সরকারের সব ধরণের নীতিমালার আওতায় থাকা সত্বেও স্বনামধন্য এই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের প্রাথমিক আওতাভুক্ত হতে না পারায় হতাশ বিরাজ করছে প্রায় এক হাজার তিনশ’ ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের মনে। তাইতো ফুঁসে উঠেছে কোমলমতি বিদ্যালয় পড়ুয়াদের কোমল হৃদয়।

বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণের দাবীতে শরতের পড়ন্ত বিকেলে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেও শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ছাত্র-ছাত্রীরা মিলিত হয় বিশাল মানববন্ধনে। পানছড়ি বাজারের প্রধান সড়কে বিশালাকার মানববন্ধনে অংশ নেয় পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের হাতে শোভা পায় নানান রঙের পেস্টুন। “পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয় সরকারি করণ চাই” “ বিধি বহির্ভূত সরকারিকরণ চলবে না” তিন বছরের ফলাফলে আমরা এগিয়ে” “অবকাঠামোয় উপজেলায় সেরা” ইত্যাদি লিখা পেস্টুন হাজারো দর্শনার্থীর নজর কেড়ে নেয়।

পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করণ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মানববন্ধনের মিলনমেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: বাহার মিয়া জানান, ছাত্র-ছাত্রীরা যে দাবী নিয়ে মানববন্ধন করেছে তা আসলে তাদের নায্য পাওনা। তারা সঠিক কাজ করেছে বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো: বেলাল হোসেন বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা যা করেছে তা যুক্তিযুক্ত। নীতিমালার অনুসরণ করলে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আসে শতভাগ। তাদের প্রাপ্য আদায়ের জন্য এ মানববন্ধন যুক্তিযুক্ত বলে জানান।

বিদ্যালয় পিটিএ সদস্য ও সমাজ সেবক মো: মতিউর রহমান জানান, এ বিদ্যালয়ে সকল সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হলে সকল সম্প্রদায় সুবিধা ভোগ করবে তাছাড়া উপজেলা সদরের পাশে হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ উন্নত বলে মত ব্যক্ত করেন।

পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জ্ঞান প্রভাত তালুকদার জানান, এই মানববন্ধনের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। কেউ উনার পরামর্শও নেন নাই বা এ ব্যাপারে কেউ কোন আলাপও করেন নাই।

পানছড়ি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শাহজাহান মিয়া জানান, এটা যেহেতু সরকারী নীতি নির্ধারণী মহলের সিদ্ধান্ত সেখানে আমার কিছুই বলার নাই।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম শাহজাহান জানান, সরকার উপজেলার মানসম্মত ১টি কলেজ ও ১টি বিদ্যালয়ের সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে। সে অনুযায়ী পানছড়ি ডিগ্রি কলেজ ও পানছড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তথ্যাদি পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যালয় জাতীয়করণের ব্যাপারে ছাত্র-ছাত্রীরা মানববন্ধন করতেই পারে বলে তিনি জানান।

পানছড়ির অভিজ্ঞ মহলের দাবী কিছুদিন পূর্বে পানছড়ি ইসলামিক ফাউন্ডেশানের মডেল কেয়ারটেকার নিয়োগ নিয়ে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশান করেছে মডেল দুর্নীতি এখন আবার বিদ্যালয় জাতীয়করণ নিয়ে চলছে নানান নাটকীয়তা। এসব তালবাহানা না করে শতভাগ নীতিমালা অনুসরণ ও যাছাই-বাছাই করে অত্র উপজেলায় বিদ্যালয় জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বলে তারা মনে করেন।

Exit mobile version