জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ

fec-image

সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। চট্টগ্রামে আগামীকাল সোমবার শুরু হচ্ছে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ। এই টেস্টের আগে অস্বস্তিতে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গন।

দুর্বল জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম টেস্ট হার, তারপর মাঠের বাইরে নানা কর্মকাণ্ডে স্থবির দেশের ক্রিকেট!চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল দশটায় শুরু হবে ম্যাচটি। যেখানে লম্বা সময় ধরে জয়খরায় ভুগছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের পর সাতটি টেস্ট খেলে একটিও জিততে পারেনি। এবার হারের বৃত্ত না ভাঙলে সিরিজই খোঁয়াবে তারা।

সিরিজের শুরুতে পিছিয়ে পড়েও সমতায় শেষ করার সমীকরণ মেলানো বাংলাদেশের কাছে নতুন কিছু নয়। অতীতে দুইবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও সিরিজ সমতায় শেষ করেছে তারা। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সিরিজের শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত সমতায় শেষ করেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

বাংলাদেশের সামনে আরও একটি সুযোগ পিছিয়ে পড়ে অন্তত সিরিজ বাঁচানোর। সেটি করতে পারলে চট্টগ্রামেও হারের বৃত্তটা ভাঙতে পারবে। এখানে সেই ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট খেললেও জেতা হয়নি স্বাগতিদের।

বাংলাদেশ দল অবশ্য জয়ে ফিরতে মরিয়া। সিলেটে হারের পর চট্টগ্রামে ক্রিকেটাররা কঠোর অনুশীলন করেছেন। এই মুহূর্তে টেস্টে হারের অন্যতম কারণ ব্যাটিংয়ের দুর্দশা। অন্যতম না বলে মূল কারণ বললে ভুল হবে না।

ঘরের মাঠের উইকেটে জিম্বাবুয়ের বোলারদের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং। দুই ইনিংসেই ব্যাটারদের ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে ম্যাচ হেরে। চট্টগ্রাম টেস্টেও ব্যাটিংয়েই থাকতে হবে মূল ফোকাস।

ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেছেন, ‘আমরা সবাই জানি, প্রথম ইনিংসে ইউনিট হিসেবে আমরা ঠিকঠাক ব্যাটিং করতে পারিনি। নিজেদেরই সমস্যায় ফেলেছি। আমরা এমন ধরনের ইতিবাচক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই, যেখানে দিনে ২০০ রান করেই থেমে যাবো না।

মিডিয়ায় ‘ট্রানজিশন’ শব্দটি শোনা যাচ্ছে। আমাদের সেখানে পৌঁছাতে হবে, সেখানে যেতে সময় লাগবে। তবে আমি খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছি, ঢিলেঢালা শট এবং সফট ডিসমিসাল কমাতে হবে। এই অবস্থা এক, দুই বা তিন টেস্টের জন্য চলতে দেওয়া যাবে না।’

বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। এইসব সমালোচনার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাংলাদেশের কোচ সিমন্স দর্শকদের ধৈর্য ধরার আহবান করেছেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানাই।

আমি জানি এ দেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি আবেগ কতটা গভীর। আমরা দলের উন্নতির জন্য সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। এজন্য আপনাদের ধৈর্য প্রয়োজন।’

এদিকে সিলেটে দারুণ পারফরম্যান্স করে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। ফুরফুরে মেজাজে সোমবার মাঠে নামছে সফরকারীরা। তবে সিরিজ জয়ের সুযোগ নিয়ে বাড়তি চাপ নিতে চান না জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।

বরং নিজেদের নির্ধারিত পরিকল্পনাতেই দৃঢ় থাকতে চান তিনি। আজ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আরভিন বলেছেন, ‘আমাদের বোঝা জরুরি যে, কোন প্রক্রিয়াগুলো আমাদের প্রথম টেস্ট জয়ে পৌঁছে দিয়েছে। আমরা ১-০ এগিয়ে আছি বলে নিজেদের ওপর বাড়তি চাপ দেওয়া উচিত হবে না বা সিরিজ জয়ের প্রত্যাশায় অস্থির হওয়া ঠিক হবে না।’

আরভিন আরও যোগ করে বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হলো পুরো বিষয়টাকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে এগোনো, এবং নিজেদের প্রক্রিয়া আর পরিকল্পনায় অটুট থাকা। যতটা সম্ভব সেই পথে এগিয়ে যেতে হবে, তাহলেই সফল হওয়ার সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরি হবে। ফলাফল নিয়ে আগে থেকেই চিন্তা করলে কাজটা কঠিন হয়ে যাবে।’

এই টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে বেশ কয়েকটি পবিবর্তন প্রায় নিশ্চিত। টানা ব্যর্থতার পর মাহমুদুল হাসান জয়কে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। তার জায়গায় এনামুল হক বিজয়ের খেলার সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়া পাকিস্তান সুপার লিগ খেলতে যাওয়া নাহিদ রানার জায়গায় বাড়তি একজন স্পিনারকে খেলানো হতে পারে।

স্পিন বিভাগে শক্তি বাড়িয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের সঙ্গী হতে পারেন নাঈম হাসান। সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে দেশের ১০৭তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তানজিম হাসান সাকিবের। সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন খালেদ আহমেদ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন