জেএসএস’র প্রতিষ্ঠাতা এম.এন লারমার মরনোত্তর বিচার দাবি সমঅধিকার আন্দোলনের

fec-image

রাঙামাটি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এবং পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলনের মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির এক বিবৃতিতে বিগত ৩ যুগে পাহাড়ে শান্তিবাহিনীর গেরিলা হামলায় নিহত ৩০ হাজার বাঙালি হত্যার বিচার দাবি করেছেন এবং এই বর্বরচিত হত্যাযজ্ঞের জন্য জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এম.এন লারমার মরনোত্তর বিচার দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এম.এন লারমার মৃত্যু নিয়ে জেএসএস নেতারা মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রকৃত তথ্য হলো ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর এম.এন লারমা তার ৮ জন সহযোগীসহ ভারতের আগরতলায় অমরপুর মহকুমার অন্তর্গত ইজারা গ্রামে কল্যানপুরে ভারত সরকারের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত গোপন ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রীতি গ্রুপের হামলায় নিহত হন। ১৯৮৩ সালের ১৪ জুন তারা প্রথমে আদর্শগত ও কৌশলগত কারণে পরস্পর সশস্ত্র সংঘষে লিপ্ত হন এবং লাম্বা গ্রুপ ও বাট্টিগ্রুপে বিভক্ত হয়ে তথাকথিত জুম্ম লিবারেশন আর্মি বা শান্তি বাহিনী।

তিনি বলেন, এম.এন লারমার একগুয়েমি ও হুমকি-দামকির জন্যই বঙ্গবন্ধু উত্তেজিত হয়ে তাকে বলেছিলেন- তোরা সব বাঙালি হয়ে যা এবং ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে পানছড়ি, দিঘীনালাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালির পল্লিতে খুনী শান্তিবাহিনীর গণহত্যার পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রেরণ করা হয়েছিল।

সমঅধিকার আন্দোলন প্রদত্ত বিবৃতিতে ঢাকার দৈনিক প্রথম আলো ১০ নভেম্বর তারিখে এমএন লারমার মৃত্যুর বিষয়টিকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে দাবি করে এর নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, কেননা খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির খেদারছড়া এলাকায় ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর এম এন লারমার খুন হয় নাই। তাকে তারই সহযোদ্ধারা ভারতের মাটিতে হত্যা করেছে এবং হত্যাকারী প্রীতিগ্রুপের ২৩৩ জন উপজাতীয় ক্যাডার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আত্মসর্মপন করেছিলেন।

বিবৃতিতে মনিরুজ্জামান মনির রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কর্মরত সকল বাঙালি সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত কর্মসূচির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কিছু দিন আগে শক্তিমান চাকমা হত্যা, ইউপিডিএফ এর ৬ জন কে হত্যা, খাগড়াছড়ি স্বনির্ভর গ্রামে দিনে দুপুরে জেএসএস বনাম ইউপিডিএফ বন্দুকযুদ্ধে ৭ জনকে হত্যা, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কর্মীসহ ৮ জনকে হত্যা ইত্যাদি পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির আলামত হিসেবে প্রতিয়মান হচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি রাঙামাটিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে আয়োজিত সভায় জেএসএস নেতা সন্তু লারমাকে দাওয়াত করার পরও তিনি ঐ সভায় উপস্থিত না হওয়াতে বিষয়টি পার্বত্যবাসী জনগণ স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করেননি এবং শেখ হাসিনা সরকারের একজন মন্ত্রীকে সন্তু লারমা অপমান করেছেন বলে পার্বত্যবাসীদের ধারণা।

বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার জন্য আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু তথাকথিত জুম্মল্যান্ড নামে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে সন্তু লারমা এবং ইউপিডিএফ ক্যাডাররা কৌশলে তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী নীল নকশা বাস্তবায়নে লিপ্ত আছেন বলে অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।

পাহাড়ে কর্মরত সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে আগামী ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে (ভিআইপি লাউঞ্জ) একটি গুরুত্বপূর্ণ শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা করা হয় বিবৃতিতে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন