জেএসএস নেতা কে এস মং পুত্র অং অং মং এর নেতৃত্বে শাহবাগে পুলিশের উপর হামলা

fec-image

গত মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির অন্যতম শীর্ষ নেতা কে এস মং এর পুত্র অং অং মং এর নেতৃত্বে পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।  হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অং অং মারমা ১ নং এজাহার ভুক্ত আসামি।

গত মঙ্গলবার রাতে রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় আরও অজ্ঞাত ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার (১২ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক।

তিনি বলেন, মামলায় ১২ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন— অংঅং মারমা (২৫), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ইডেন মহিলা কলেজ শাখা সভাপতি সুমাইয়া শাহিনা (২৫), জবি ছাত্র ইউনিয়নের আদ্রিতা রায় (২৩), ছাত্র ফেডারেশনের আরমান (৩০), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু (২৮), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল আমিন রহমান (২৫), বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা রিচার্ড (২৬), ছাত্র ফেডারেশনের হাসান শিকদার (২৫), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের (ঢাবি) সীমা আক্তার (২৫), বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌকত আরিফ (২৬), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাঈন আহাম্মেদ (২৪), গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহাম্মদ চৌধুরী (২৫)। এ ছাড়া ৭০ থেকে ৮০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয় পুলিশ। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের নিরাপত্তা ও রাস্তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিক্ষোভকারীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করা হলে তারা উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে মারমুখী আচরণ শুরু করতে থাকে।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের অনুরোধের কোনো তোয়াক্কা না করে লাঠিসোঁটা নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যারিকেড অতিক্রম করার চেষ্টা করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। একই সঙ্গে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশ সদস্য রায়হান, কাউছার, মো. রোহান, মো. সাইফুল ইসলাম, রাজারবাগের নারী পুলিশ সদস্য আদিবা, রুবিনা গুরুতর আহত হন। পরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কে এই অং অং মারমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক ও জেএসএসের মুখপাত্র এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং এর পুত্র অং অং মং তথা অং অং মারমা। স্থায়ী ঠিকানা বান্দরবান শহরের উজানীপাড়ায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের ছাত্র অং অং মারমা। পিতার রাজনৈতিক আদর্শের পথ ধরে অং অং মারমা ঢাকায় বাম রাজনৈতিক ছাতার আড়ালে পাহাড়ে জনসংহতি সমিতির রাজনৈতিক মতবাদ প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়।

নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ এবং নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৯ দফা দাবিতে এক গণপদযাত্রা ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতি ও সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। যেখানে অন্যান্যদের সাথে আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন সমূহের অনেক নেতাকর্মীগণ, যাদের নেতৃত্ব দেন বান্দরবান জেলার অং অং মারমা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন