জেলে ইসমাইল কেন বেওয়ারিশ লাশ

fec-image

মধ্যযুগীয় দাস প্রথাকেও হার মানানো এক হতভাগা; নাম মো. ইসমাইল। কথিত নাম দেশী। সবার কাছে যিনি দেশী নামে পরিচিত। বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। শ্রম বিক্রি করে পেটের ক্ষুধা নিবারণ করেন। শ্রম বিক্রি করতেই দালালের বোগল দাবায় চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটির বরকলে। পেশা হিসেবে তার ভাগ্য নির্ধারিত হয় জেলে। কাজ নেন সোহেল নামের এক জাল মালিকের নিকট। কাজ করেন প্রায় তিন মাসের মতো।

কঠোর পরিশ্রম, বেতন নামে মাত্র, শারীরিক নির্যাতন আর ক্ষুধার জ্বালা তাকে বিদ্রোহী করে তুলতে চেয়েছিল বহুবার। পালানোর প্রতিটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় মালিকের শ্যেন দৃষ্টির কাছে; কপালে জোটে নিষ্ঠুর প্রহার।

শেষবার পালানোর চেষ্টার দিনটি ছিল সোমবার ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর। সেইদিন তিনি ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে সোহেলের মিলের এলাকা থেকে পালিয়েছিলেন। কিন্তু বিধিবাম; এইবারও ধরা খেলেন। তাকে আটক করা হয় উপজেলার বরুণাছড়ির ১০নম্বর বাত্তিটিলা নামক স্থান থেকে।

মালিক পক্ষের লোকজন তাকে ধরে এনে ওইদিন বেদম প্রহার এবং পরে হাত-পা বেঁধে কাপ্তাই হ্রদে ডুবিয়ে রাখে। এরপর জেলে ইসমাইল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে স্থানীয় ফার্মেসিতে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে পাঠানো হয়।

মালিক সোহেলের ব্যক্তিগত লোক আজিম অসুস্থ জেলে ইসমাইলকে একটি ইঞ্জিন চালিত মাছের বোটে তুলে দেন এবং আরিফুল তাকে বোটে করে নিয়ে আসেন রাঙামাটি সদর হাসপাতালে দুপুর ২টায়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় অসুস্থ ইসমাইলের নাম দেওয়া হয় মো. নিলয় (২২), পিতা- মো. আকবর, মাতা-রোজিনা বেগম। ঠিকানা. ছোট হরিণা, বরকল, রাঙামাটি।

ইসমাইল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মারা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কোন স্বজন খুঁজে না পেয়ে খবর দেয় পুলিশকে। পুলিশ এসে লাশ দাফনের জন্য রাঙামাটি পৌরসভাকে দায়িত্ব দেয় এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে রাঙামাটির কবরস্থানে মাটিচাপা পড়ে এক আধুনিক দাস। যার বাবা মা সবাই আছে, জঠর জ্বালা মেটাতে কাজ করতে এসে প্রভাবশালীদের কব্জায় ইসমাইল হয়ে গেলো বেওয়ারিশ।

পুলিশি নিয়মে রাঙামাটি পুলিশ বরকল পুলিশকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করে। বরকল পুলিশ হাসপাতালে দেওয়া উল্লেখিত ছোট হরিণায় খুঁজে তার প্রকৃত পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি। ঘটনার এতদিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ বিষয়টির কোন সুরাহা করতে পারেনি। ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে ফিসফিসানি থেকেই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে কিছু সংবাদকর্মী।

সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে নামলে এইবার থলের বিড়াল বের হয়ে আসে। জেলে ইসমাইলকে নির্যাতনের নানা কাহিনী আর প্রমাণ হাতে এসে পৌছায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা মুখ খুলতে শুরু করে।

তাই টিমটি এইবার ঘটনার বিষয় বস্তুর গভীরতা জানতে বরকল উপজেলার বরুণাছড়ি এলাকায় ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে পাড়ি জমান। সরেজমিনে গেলে একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী ক্যামেরার সামনে সাথে কথা বলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলার ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আমলকি ব্যবসায়ী মো. খলিল বলেন, আমি ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে আমলকি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বোটে তুলে দিতে বরুণাছড়ি ১০নম্বর এলাকায় যায়। তারপর দেখতে পেলাম জাল মালিক সোহেলের লোক আরিফুল একজন ব্যক্তিকে ৬১১নাম্বার একটি বোটে করে রাঙামাটির উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে আরিফুল আমাকে জানায় বোটে রাখা ব্যক্তির ডায়েরিয়া হয়েছে। তাই তাকে চিকিৎসা করাতে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে ছেলেটি মারা যাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেখতে পেলাম। জানতে পারলাম যে ছেলেটি মারা গেছে, সে সোহেলের জালে কাজ করতো।

হাজাছড়া বাসিন্দা এবং কেচকি জালের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, প্রতিবছর ১০নম্বর বরুণাছড়ি এলাকায় হট্টগোল লেগে থাকে। জাল মারা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা বিপাকে পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আমি কিছুদিন আগে বরুণাছড়ি বাজার এলাকায় ব্যবসায়িক কাজে গেলাম। পরে দেশীর সাথে আমার সেখানে দেখা হয়। তার সাথে আমি চা-নাস্তা খায়। পরে জানতে পারি যার সাথে বসে চা-নাস্তা খেয়েছি সেই ছেলেটি ১২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি সদর হাসপাতালে মারা গেছে।

তিনি জানান, বরুণাছড়ি এলাকায় জেলেদের মধ্যে প্রতিবছর মারামারি হয়। জাহাঙ্গীর মেম্বার এর ছেলেসহ আরও অনেকে বরুণাছড়ি এলাকায় জেলেদের মারধর করে, বেতন দেয় না। তাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

এই ধরণের ঘটনার শিকার জেলে সাগর বলেন, আমি চট্টগ্রামের স্টেশনে থাকি। চার বছর আগে আমি দালালের খপ্পরে পড়ে বরকল উপজেলায় চলে আসি। তারপর জাল মালিক সোহেলের জালে কাজ নেই। সোহেল আমাকে ঠিক মতো বেতন দেয় না, মারধর করে। আমি তার কাজ ছেড়ে দেই। এখন অসহায় যে ছেলেটি মারা গেছে আমি সেই ছেলেটির জন্য সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

বরুণাছড়ি ১০নম্বর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান শামীম বলেন, এখানে ৯৫ ভাগ মানুষ জেলে। এ ধরণের ঘটনা এখানে হরহামেশা ঘটে। আমি যেহেতু এখানে গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে প্রায় থাকি। তাই অনেক ঘটনা আমার জানা।

তিনি আরও বলেন, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অজ্ঞাত লাশের ছবি দেখতে পেলাম। ছেলেটিকে দেখে চিনেছি যে, মারা যাওয়া ব্যক্তি সোহেলের জালে কাজ করে। সবাই ছেলেটিকে দেশী নামে ডাকে। তিনি জানান, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যে ছেলেটি মারা গেছে, সেই ছেলেটিকে সোহেলের লোকজন মেরেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

তিনি আরও জানান, ব্যবসা করুক। আমাদের কোন সমস্যা নেই। আমি মা-বাবার ছেলে। যে মারা গেছে সেও কোন মা-বাবার ছেলে। এ ধরণের যাতে আর কোন ঘটনা এই এলাকায় না ঘটে তাতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

একই এলাকার বাসিন্দা রাহাত তালুকদার জানান, আমি কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেখতে পেলাম একটি অজ্ঞাত লাশের ছবি ভাইরাল হয়েছে। এরপর জানতে পারলাম অজ্ঞাত লাশের ছবি ব্যক্তিটি সোহেলের জালে কাজ করে।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী সোহেলদের মতো যারা চট্টগ্রামের স্টেশন রোড থেকে এনে এরকম নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। যাতে এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে।

ঘটনায় অভিযুক্ত আরিফুলের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে সাংবাদিক পরিচয়ে তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি জানান, আমি কাট্টলীর জোর টিলায় আছি। এইবার সাংবাদিকদের দলটি জোরটিলায় গেলে তার উল্লেখিত ঠিকানায় গিয়ে পায়নি। তার মুঠোফোনে কল করলেও তার ব্যবহৃত দু’টি রবি নাম্বার বন্ধ করে দেন তিনি।

বরুণাছড়ি এলাকার বাসিন্দা ও ঘটনায় অভিযুক্ত মো. আজিম এর কথা বললে তিনি সাংবাদিক টিমকে জানান, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।

অভিযুক্ত মৎস্য ব্যবসায়ী মো. সোহেল রানা বলেন, আমার একটি স’মিল আছে, ফার্নিচার ব্যবসা আছে। ৬১১ নাম্বার আমার। আমি কোন জালের ব্যবসা করি না। যারা মাছ ধরে তাদের কাছ থেকে ওজনে ১০ টাকার কমিশনে ব্যবসা করি। আমার ৫ জন পার্টি আছে।

তিনি আরও বলেন, যারা বাজারে আসে সবাই সবাইকে চেনে। আমার আওতাধীন এরকম কোন লোক ছিলো না। আমার অধীনে কাজ করলে তো স্থানীয়রা চিনতো। আমি আমার মোবাইলের মাধ্যমে দেখেছি অজ্ঞাত ছেলের ছবিটি। আমি তাকে চিনি না। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি অপরাধী হবো। আমি তো কোন জাল ব্যবসার সাথে জড়িত না। আমি কমিশনে ব্যবসা করি। তাই লোক আনার কোন প্রশ্ন আসে না। আমার একজন ব্যক্তিগত লোকছিলো। নাম তার নাজমুল। সে চলে গেছে একমাস আগে। তার ফোন নাম্বার আমার কাছে আছে। আপনারা কথা বলতে পারেন।

তিনি জানান, আমার বাবা ২৫ বছর ধরে কমিশনার। আমি ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার। ভিকটিম যদি না থাকে তাহলে বলবো এটা ষড়যন্ত্র। আমাদের ২৫ বছরের সুনাম কেউ মান ক্ষুন্ন করতে কাজ করছে। সর্বশেষ একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে হেনস্থার শিকার না হয় স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এটাই আমার প্রত্যাশা।

সুবলং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কমিশনার এবং বরুণাছড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সোহেলের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যে ছেলেটি মারা গেছে শুনছি তা আমার এলাকার না। এরকম কোন তথ্য আমার কাছে নেই।

ছেলেটি যার কাছে ছিলো সে দোষী হবে। আমার ছেলের কাছে নাজমুল নামের এক লোক কাজ করতো। আমরা জাল মারি না। আর বাইরের কোন লোক আমাদের সাথে কাজ করে না।

বরকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জসীম উদ্দীন বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি বরকল উপজেলায় ছোট হরিণায় এ ধরণের কোন লোক নাই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশটির পরিচয় শনাক্তে আমাদের অনুসন্ধান টিম কাজ করছে। যাকে প্রয়োজন হবে আমরা তদন্তের স্বার্থে তাকে ডাকবো।

রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যে অজ্ঞাত ব্যক্তি মারা গেছেন তার প্রকৃত খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাই তাকে বেওয়ারিশ দেখিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি দাফন করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তির আগে যে ঠিকানা উল্লেখ করেছেন সে ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ নিতে বরকল ওসিকে অবগত করা হয়েছে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন সেই ঠিকানা অনুযায়ী এ নামের কোন ব্যক্তির খোঁজ পায়নি।

শ্রমিক সাপ্লাই বা দালালি কাজে জড়িত এমন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিম। (ছদ্দনাম মো. হাশেম। নাম প্রকাশ না করার সত্তে¡ তিনি বক্তব্য দেওয়ায় ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় উল্লেখ করা যাচ্ছে না)।

তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম স্টেশন রোড থেকে টাকার বিনিময়ে শ্রমিক সাপ্লাই দিয়ে থাকি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অসহায় মানুষরা কাজের সন্ধানে এ স্টেশন রোডে এসে অপেক্ষা করে। এলাকায় আমাদের কয়েকটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা এসব অসহায় মানুষদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজের কথা বলে পাঠিয়ে দেয়। বিনিময়ে যার কাছে লোক সাপ্লাই দেই তার কাছ থেকে অর্থ পাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব অসহায় শ্রমিকদের বেশিরভাগ রাঙামাটিতে জেলেদের কাজ করার জন্য পাঠায়। বিনিময়ে জাল মালিকরা আমাদের একটি অংকের টাকা দেয়। মূলত জাল মালিকরা সস্তায় শ্রমিক ক্রয় করার জন্য মূলত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখে বলে এই শ্রমিক সাপ্লাই এর দালাল যোগ করেন।

তিনি বলেন, আমি এ পেশা ছেড়ে দিয়েছি। পুলিশের কাছে কয়েকবার এসব কাজ করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি। তাই এখন এসব কাজ করি না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে জাল মালিকদের কাছে ইসমাইলদের মতো অনেক অসহায় শ্রমিক কাজ করে। যারা ঠিক মতো পেঠের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে না। অর্থাৎ জাল মালিকরা তাদের ঠিক মতো খেতে দেয় না। বঞ্চিত করে তাদের ঘামে বিক্রি করা অর্জিত শ্রমের আয় থেকে। তাই সচেতন মহলের দাবি, কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়, শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মূল্য ফিরে পাক। কারো দাস হয়ে নয়, মানুষের পরিচয়ে বাঁচুক তারা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসমাইল, জেলে, বেওয়ারিশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন