parbattanews

টানা বর্ষণে পানছড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পানছড়ি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন সঠিক হিসাব বলতে না পারলেও ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা বলে জানিয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভেঙ্গে গেছে দুধুকছড়া ফুট ব্রীজ, চেংগী নদী গ্রাস করে নিয়েছে ইউপি কার্যালয়ের অর্ধেকাংশ, বন্ধ রয়েছে মুনিপুর-তারাবন সড়ক যোগাযোগ, ফুট ব্রীজ ধ্বসে পড়ায় বন্ধ হয়েছে ৪০ গ্রামের সাথে মোটর সাইকেল, টমটম ও সিএনজি যোগাযোগ।

পূজগাং মূখ উচ্চ বিদ্যালয় ও লতিবান ইউনিয়ন কার্যালয়ে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। এরমধ্যে পানি কমে যাওয়ায় পূজগাং মূখ উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকা আশ্রিতরা নিজ নিজ ঘরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিদিন শতশত লোকের চলাচলের একমাত্র মুনিপুর-তারাবন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যালয়ে যেতে।

দুধুকছড়ার ফুট ব্রীজটি মাঝখানের পিলার দুটি নদীর গর্ভে চলে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ব্রীজটি লোগাং ও চেঙ্গী ইউপির প্রায় ২০ হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম বলে জানায় কলেজ পড়ুয়া ইমন চাকমা।

পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কুমার দাস জানান, ব্রীজটি এলজিইডি’র অধীনে হলেও ব্রীজটি এ অধিদপ্তর থেকে করা হয়নি। সম্ভবত উন্নয়ন বোর্ড বা জেলা পরিষদের অধীনে ব্রীজটি পার্বত্য শান্তি চুক্তির বছরে করা হয়েছে। পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো আশেকুর রহমান ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে সরেজমিনে গিয়ে তাদের খবর নেন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করার কাজ শুরু করেন।

তাদেরকে সহযোগিতা করাসহ ব্রীজটি আসা-যাওয়ার উপযোগী ও মুনিপুর-তারাবন সড়ক স্বাভাবিক করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, লতিবান, চেংগী ও লোগাং পাঁচটি টি গ্রামে গৃহবন্ধীর সংখ্যা প্রায় এগারশ আর ভেঙ্গে পড়া ঘরের সংখ্যা ষোলটি।

ইতিমধ্যে চাব্বিশটি পরিবারের মধ্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খোলা রয়েছে দুটি আশ্রয়কেন্দ্র। তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের হাতে চাহিদামত সাহায্য রয়েছে। মধু মঙ্গল পাড়ার চন্দ্রজয় চাকমা, বিনয় চাকমা, জীবন্ত চাকমা, ধন্য চন্দ্র পাড়ার তক্ক চাকমা, মনজাঙ্গা চাকমা, বেঙ পেদা চাকমা, কিনাধন বৈদ্য পাড়ার তুকি চাকমারা বসতঘর ভেঙ্গে পড়ায় মানবেতর দিন যাপন করছে বলে জানায়।

পানছড়ির প্রবীন মুরুব্বীরা জানায়, এবারের বর্ষণ অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢলের পানি নামতে শুরু করায় কাচা ঘর-বাড়ি ভাঙ্গার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Exit mobile version