parbattanews

টেকনাফের স্কুলগুলোতে রোহিঙ্গা শিশু!

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে টেকনাফের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রোহিঙ্গার সন্তানরা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে সদ্য আসা রোহিঙ্গাসহ দুয়েক বছর আগে রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে যেসব রোহিঙ্গা পরিবার টেকনাফের বিভিন্ন পাড়া-গ্রামে ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল পরবর্তীতে সেসব রোহিঙ্গা পরিবারগুলো এদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যাবার প্রচেষ্টা হিসাবে তাদের সন্তানদের বাংলা শিক্ষায় শিক্ষিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা নিয়ে এদের কেউ কেউ জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করে আবার কেউ কেউ ভুয়া জন্মনিবন্ধন দিয়ে টেকনাফের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নুরানী মাদ্রাসায় সহজে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যা তদন্ত করলে সহজেই বের হয়ে আসবে বলে জানান স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা।

আবার অনেকে রোহিঙ্গাদের আত্মীয় স্থানীয় ব্যক্তিদের আইডি কার্ড ব্যবহার করে তাদের সন্তান পরিচয়ে জন্মনিবন্ধন তৈরিরও অভিযোগ উঠেছে। যদিও বর্তমানে জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় এ প্রক্রিয়াটি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ভূয়া জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রোহিঙ্গার সন্তানরা ভর্তি হচ্ছে বলে তথ্য মিলেছে।

এরমধ্যে টেকনাফ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীতে অধ্যয়ণ করছে মোর্শেদ আলম (১৫) নামে এক রোহিঙ্গা শিশু। এ শাখায় তার রোল নং ২৩। ৪-৫ বছর পূর্বে তারা মিয়ানমারের ছোট গৌজিবিল হতে এসে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের পূর্ব গোদারবিল গ্রামে আশ্রয় নেয়। তার পিতা রফিক আহমদ মিয়ানমারে মৃত্যুবরণ করেন। তার মা জোহরা বেগম তার অপর ভাইবোনদের নিয়ে গোদারবিল গ্রামে গরুবাজার সংলগ্ন জনৈক তৈয়ুবের ভাড়াটিয়া হিসাবে অবস্থান করতে থাকে। এ সময় মোর্শেদ আলমকে তাদের আত্মীয় নুর নাহার ও সৈয়দ আমিনের সন্তান পরিচয় দিয়ে টেকনাফ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীতে ভর্তি করেন। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেন। এছাড়া স্থানীয়দের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে মাদকসহ নানা অপরাধে পরিবারটির জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের এক মেয়ে জামাই ইয়াবাসহ আটক হয়ে জেলে আছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।

এছাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীতে ফায়সেল নামে অপর এক রোহিঙ্গা শিশুসহ আরো অন্যান্য রোহিঙ্গার সন্তানরা পড়ালেখা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু টেকনাফ সরকারি মডেল প্রাইমারিই নয় টেকনাফের অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রোহিঙ্গার সন্তানরা অগোচরে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন কোন রোহিঙ্গার সন্তান অত্র বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নেই বলে দাবি করেন। তিনি জানান, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী জন্মনিবন্ধন ও পিতামাতার আইডি কার্ড দেখে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করানো হয়। তবে আগে এসব কিছু দেখা হতো না বলে স্বীকার করেন তিনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন জানান, রোহিঙ্গার সন্তানদের প্রাইমারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না করাতে নির্দেশনা রয়েছে। সুর্নির্দিষ্ট তথ্য পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version