“স্হানীয় কৃষক অপহরণের চারদিন অতিবাহিত হলেও জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার হয়নি।”

টেকনাফে অপহৃত দুই স্থানীয় কৃষক চারদিনেও উদ্ধার হয়নি: পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত

fec-image

পুলিশ গত চারদিন ধরে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে বিরামহীনভাবে গভীর পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গা ডাকাত বাহিনীর হাতে আটক স্হানীয় দুই কৃষকের কোন হদিস এখনও পায়নি।

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার দুই বাংলাদেশী স্থানীয় কৃষক অপহরণের চারদিন অতিবাহিত হলেও জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার হয়নি।

এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ, আতঙ্ক ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসি গত শুক্রবার কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করে বিশাল জমায়েত এবং বিক্ষোভও করেছে।

পুলিশ গত চারদিন ধরে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে বিরামহীনভাবে গভীর পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গা ডাকাত বাহিনীর হাতে আটক স্থানীয় দুই কৃষকের কোন হদিস এখনও পায়নি।

পুলিশ, র‌্যাবসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা অতীতে বিভিন্ন সময়ে কুখ্যাত হাকিম ডাকাতকে ধরার জন্য নানা কৌশলে অভিযান পরিচালনা করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে এই ডাকাত সর্দার।

রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের নেতৃত্ব সশস্ত্র রোহিঙ্গারা গত ২৯শে এপ্রিল বুধবার রাতে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মীনাবাজার এলাকার ধানক্ষেত থেকে স্থানীয় ৬ জন কৃষককে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়।

অপহরণের কয়েক ঘন্টা পর চালসহ খাদ্যসামগ্রী মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণের শিকার ৬জনের মধ্যে কৃষক আবুল হাশেম এবং তার দুই পুত্র জামাল উদ্দীন ও রিয়াজ উদ্দীনকে মুক্তি দেয় হাকিম বাহিনী।

বাকি তিনজনকে নিয়ে গহীন পাহাড়ে ঢুকে কখনও তিন লাখ আবার কখনও ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে ডাকাতরা।

ডাকাতদের হাতে জিম্মি তিনজনের মধ্যে আক্তার উল্লাহ নামে একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ গত ১লা মে শুক্রবার ভোরে হোয়াইক্যংয়ে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। আক্তার উল্লাহকে হত্যার পর ডাকাতেরা তার স্বজনদের মোবাইল করে খবর পাঠায়। সে সূত্রে স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ। এখনও বিশাল অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ডাকাতেরা আটক করে রেখেছে কৃষক মোহাম্মদ শাহেদ(২৫) ও মোহাম্মদ ইদ্রিস(২৭)কে।

অপহৃত শাহেদের মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় দুইদিন আগে। অন্যথায় তাদের ও আক্তার উল্লাহর মতো মেরে ফেলার হুমকি দেয় ডাকাতেরা।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আজ দুপুরে অভিযানস্হল থেকে বলেন, হোয়াইক্যং এলাকার বিশাল পাহাড়ের চার পাশ পুলিশের আটটি টিম ঘেরাও করে সাড়াঁশি অভিযান চালাচ্ছে। ডাকাতদের কিছু আলামতও পাওয়া গেছে। তিনি সকলকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ জানিয়ে উদ্ধারের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি অপহৃতরা উদ্ধার না হওয়া এবং সশস্ত্র ডাকাতেরা আটক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।

স্থানীয় এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, অপহরণকারীদের নেতৃত্বে রয়েছে কুখ্যাত রোহিঙ্গা আবদুল হাকিম ডাকাত। তিনি শুধু এই অপহরণ নয়, তার আগেও স্কুল শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণীর লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়েছে। অনেককেই নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তাকে ধরতে ইতিমধ্যে হেলিকপ্টারযোগেও অভিযান পরিচালনা করেছিল র‌্যাব।
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি হারুনুর রশিদ সিকদার ও আজ পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য অভিযানে পুলিশের সাথে পাহাড়ে অবস্হান করছেন। তিনি বলেন, পুলিশ গোটা পাহাড় ঘিরে সাড়াঁশি অভিযান চালাচ্ছে। আশা করছি সুখবরের।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপহৃত, অব্যাহত, অভিযান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন