টেকনাফে অপহৃত ৪ কৃষকই মুক্তিপণে বাড়ি ফিরেছে
টেকনাফের হ্নীলা পাহাড়ি এলাকায় ক্ষেতের ফসল পাহারা দেওয়ার সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের হাতে অপহৃত ৪ জন কৃষক দু’দফায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রাণে রক্ষা পেয়ে বাড়ি ফিরেছে। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরা আগামীতে এমন ঘটনা দমনে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকালে অপহরণকারী চক্রের দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
জানা যায়, বুধবার হ্নীলা রঙ্গিখালী পাহাড়ের পাদদেশ থেকে লেচুয়াপ্রাং এলাকার মৃত আবুল হোছনের ছেলে আব্দুস সালাম(৪৮)-কে উদ্ধার করে বাড়িতে আনা হয়। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকালের দিকে লেদা পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে মুক্তিপণের জন্য দাবিকৃত ৬ লাখ টাকার মধ্যে ধার করে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সন্ধ্যায় রঙ্গিখালী পাহাড়ি এলাকা হতে হ্নীলা লেচুয়াপ্রাং এলাকার ছৈয়দ হোছন ওরফে গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান (৩৭), ফজল করিম ওরফে লাল মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম(৪২) এবং রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ(১৫)-কে মুক্তি দিলে তারা বাড়িতে এসে পৌঁছায়। কিন্তু আব্দুস সালামের মুক্তির জন্য অপহরণকারীরা ১০ লাখ টাকা দাবি করে। সেই টাকা দিতে পরিবার অপারগ হওয়ায় আটকে রাখে। অবশেষে নিরুপায় হয়ে কৃষক আব্দুস সালামের প্রাণ রক্ষার্থে তাদের দাবিকৃত টাকা দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয় এই কৃষককে।
গত ২ থেকে ৩ মাসের ব্যবধানে উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর ও বাহারছড়া এলাকার দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী কৃষক ও লোকজনকে সশস্ত্র সন্ত্রাসী চক্র অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতনের পাশাপাশি মুক্তিপণ আদায় করে পুরো টেকনাফবাসীকে চরম আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাই এসব চক্র এবং তাদের সহযোগীদের সনাক্ত করে সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে কৃষিপ্রবণ এলাকাকে নিরাপদ জোনে পরিণত করার দাবি উঠেছে।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী অপহৃত ৪ জন কৃষক দু’দফায় ফিরে আসার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুরো টেকনাফের পাহাড়ি জনপদে আগামীতে এই জাতীয় লোমহর্ষক ও নির্মম ঘটনারোধে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি রাতের প্রথম প্রহরের দিকে টেকনাফের হ্নীলা ঊলুচামরী মুরুং পাড়া বাহাতির ছড়ার টিলায় চাষাবাদকৃত ফসল পাহারা দেওয়ার জন্য তৈরিকৃত ঝুপড়ি ঘর থেকে তাদেরকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
পাহাড়কেন্দ্রিক ফসল উৎপাদনে নিয়োজিত বিভিন্ন শ্রেণির কৃষকেরা খাদ্যপণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত মানুষের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।