বহাল তবিয়তে রোহিঙ্গা জামাল মাঝি

টেকনাফে কোটি টাকার ১৩টি স্বর্ণের বার উদ্ধার

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফ বন্দরে মিয়ানমার থেকে আসা পণ্যবাহী নৌ-যান তল্লাশি করে ১৩টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড সদস্যরা। এ সময়
জামাল মাঝিকে আটক করেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

যদিও বা টেকনাফ স্টেশন অফিসার লে. কমান্ডার মো. আশিক আহমেদ জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন বরইতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব বার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশন অফিসার লে. কমান্ডার মো. আশিক আহমেদ জানান, মিয়নমার থেকে আসা ট্রলারে স্বর্ণ পাচার করছে, এমন খবরে তিনিসহ কোস্ট গার্ডের একটি দল বরইতলী প্যারা বন এলাকায় অবস্থা নেন। এ সময় সন্দেহভাজন একজনকে দেখে থামার সংকেত দিলে কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে একটি বস্তা ফেলে প্যারাবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন ওই ব্যক্তি। পরে ফেলে যাওয়া বস্তাটি তল্লাশি করে ১৩টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। ওই বস্তায় প্রায় ৩০ কেজির মত গুঁড়ও (মিঠা) পাওয়া যায়।

স্টেশন অফিসার আরও জানান, উদ্ধার করা স্বর্ণের বারগুলোর দাম প্রায় ১ কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান কোস্ট গার্ডের এই কর্মকর্তা।

এদিকে অনুসন্ধান জানা যায়, মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী নৌ-যান টেকনাফ স্থল বন্দরের উদ্দেশ্য আসেন জনৈক জামাল মাঝি। ওই জামাল মাঝির পণ্যভর্তি নৌকাটি টেকনাফ বন্দরের আগে কোস্ট গার্ডের জেটিতে তল্লাশি চালায় কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। এতে এক পর্যায়ে স্বর্ণের বার উদ্ধার করে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। কৌশলে জামাল মাঝি ও পণ্যভর্তি নৌকাটি ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পণ্যসহ নৌকাটি বন্দরে ভিড়ে। ওই নৌকায় মোট ৩০টি স্বর্ণের বার ছিল।

এছাড়া একটি সূত্র মতে নৌকার মাঝি জামাল কৌশলে কোস্ট গার্ডকে ধরা দিয়ে মোট স্বর্ণ বারের একটি অংশ গায়েব করে প্রকৃত স্বর্ণ মালিককে ঠকিয়ে দিয়েছে।

জামাল মাঝিকে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেকনাফ স্থল বন্দরে দেখা গেছে। সেই সময় তিনি স্থানীয় সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসায়ীদের কারো কারো সাথে আলাপের ছলে ৩০টি স্বর্ণের বার ছিল বলেও স্বীকার করে। তাছাড়া ওই নৌকার মাল্লা। যিনি বন্দরে ‌’বলি’ নামে পরিচিত ছিল। তাকে সকাল থেকে বন্দরে আর দেখা যায়নি। অনেকেরই ধারণা হয়তো তার হাতে বেশ কটি স্বর্ণের বার ছিল। যা কৌশলে সরিয়ে রাখতে ওই ‌’বলি’ আত্মগোপন চলে গেছে।

টেকনাফ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছৈয়দ হোছাইন জানান, “রোহিঙ্গা জামাল মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে।”

অপরদিকে কোস্ট গার্ড টেকনাফে বড়সড় অভিযান চালিয়ে থাকলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা স্থানীয় সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে থাকেন। কিন্তু এই প্রথম একটি এক্সক্লুসিভ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। যেখানে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের আমন্ত্রণ না জানিয়ে ১০০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার শহর থেকে কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ কর্মীদের ডাকা হয়েছে। যা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার আশিক আহমেদ জানান, মূলত স্বর্ণ উদ্ধার বিষয়টি ভালো কভারেজ পেতে সংবাদ সম্মেলনটি এভাবে আয়োজন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার, টেকনাফ, স্বর্ণের বার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন