টেকনাফে পাচারচক্রের আস্তানায় হানা, ২০ মালয়েশিয়াগামীসহ ৩ দালাল আটক
কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে ২০ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ৩ দালালকে আটক করা হয়।
আটককৃত দালালরা হলেন, টেকনাফের সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকার লোনা বেগম (৩৫)। সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার মো. আব্দুল্লাহ (৩০) ও শাহপরীরদ্বীপ মগপুরা এলাকার রিদুয়ান (২৮)।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) গভীর রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরীর মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামীদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি এবং ১২ জন রোহিঙ্গা উখিয়া উপজেলার কতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে মানব পাচারকারী একটি চক্র টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জমায়েত করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে দক্ষিণ লম্বরী এলাকার একটি বাড়ি থেকে ৩ দালাল ও ২০ মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ১৭ পুরুষ, পাঁচজন নারী ও এক শিশু রয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মালয়েশিয়াগামী যাত্রী রোহিঙ্গা নারী উম্মে হাবিবা বলেন, ‘৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে আমার ছোট বোনকে নিয়ে সমু্দ্রপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করি। এ জন্য দালালকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি ৩ লাখ টাকা মালেয়শিয়া পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু দালালরা টেকনাফের একটি বাড়িতে ২ দিন আটকে রাখে। অবশেষে যাত্রার প্রস্তুতিকালে পুলিশের কাছে ধরা পড়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরও বাড়িতে এবং পাহাড়ে অনেক রোহিঙ্গা আটকা আছে দালালদের হাতে।’
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা বলেন, ‘উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এক দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশের জালে আটক হওয়ার পর আর যাওয়া হয়নি।’
মালয়েশিয়াগামী নুর কায়াস নামের এক রোহিঙ্গা তরুণী বলেন, ‘আমার বোন মালয়েশিয়া থাকে। সে মালয়েশিয়ায় আমার বিয়ে ঠিকঠাক করেছে। তাই বিয়ে করতেই আমি মালয়েশিয়ায় যাচ্ছিলাম। দালালকে চিনি না আমরা। অনেকেই মালয়েশিয়া থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারাই মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ক্লিয়ার করেন।’
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আটককৃত দালালদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে নতুন করে মামলা দায়ের করে হবে। এর আগে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রোহিঙ্গাদের স্ব-স্ব ক্যাম্পে পাঠানো হবে।’