টেকনাফে পাচার চক্রের আস্তানা থেকে ১৪ জন উদ্ধার

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণকারীদের আস্তানায় সাঁড়াশি অভিযানে ১৪ জনকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।টেকনাফ উপজেলা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকার মানব পাচার চক্রের হোতা সাইফুলের আস্তানা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছেন।

রবিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই টেকনাফে অপহরণ চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির অভিযান চলমান রয়েছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়া পাচারের জন্য বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে জিম্মি করেছে এমন তথ্য পায় বিজিবি।

এ খবর পেয়ে টেকনাফের লেঙ্গুরবিল গ্রামের হাফেজ আহমদের পুত্র সাইফুল ইসলামের গোপন আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে সেখান থেকে ১৪ জন বাংলাদেশী নাগরিককে উদ্ধার করা হয়। তারা বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা থেকে দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে জিম্মি করে দুর্গম আস্তানায় আটকে রাখা হয়েছে।

উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীরা জানান-
চক্রটি দালালদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে টেকনাফে নিয়ে আসে। পরে সুযোগ বুঝে টেকনাফ ও মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে অপহরণ করে দুর্গম স্থানে আটক রাখা হয়েছিল। তারপর থেকে অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।

এছাড়াও, মুক্তিপন আদায়ে অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগীদের উপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনও করেছে। অত্যাচারের এ সকল অমানবিক ভিডিও চিত্র ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণের টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হতো।

এদিকে বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল আশিকুর রহমান আরো জানান, কুখ্যাত অপরাধী চক্রটির সদস্যদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের পরিবারের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

উল্লেখ্য যে,গত ২৪ এপ্রিল গভীর সাগর দিয়ে মায়ানমার হতে বাংলাদেশে মানব পাচারকালে মোঃ সাইফুল ইসলামসহ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আটক করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। সে সময় ওই সাইফুল ইসলাম আটক না হলেও তার বিরুদ্ধে গত ২৪ এপ্রিল টেকনাফ মডেল থানায় একটি মানব ও মাদক পাচারের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়।

ওই সময়ের অভিযানে উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে মানব পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে মেরিন ড্রাইভ সড়ক এবং দমদমিয়া এলাকায় বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়। এইসকল অভিযানের সূত্র ধরে জানা যায় যে, মানব পাচারকারী চক্রটি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় সম্প্রতি বেশ কিছু বাংলাদেশী নাগরিককে অপহরণ করে গোপন স্থানে জিম্মি করে রেখেছে।
ওই খবরে শনিবার গভীর রাতে উক্ত অভিযান পরিচালনা করে ১৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান বিজিবি অধিনায়ক।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, টেকনাফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন