টেকনাফে সরকারী আদেশ অমান্য করে কর্মস্থলে যোগদান করেনি এক সহকারী শিক্ষক!

fec-image

অনিয়ম

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান:
টেকনাফ উপজেলার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ অমান্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি আদেশ অমান্য করে এ শিক্ষক নির্দিষ্ট কর্মস্থলে যোগদান না করেই বীরদর্পে টেকনাফ পৌরসভায় ঘোরাফেরা করছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। আর এদিকে সরকারী আদেশ অমান্য করে কর্মস্থলে যোগদান না করায় তাদের খুঁটির জোর কোথায়? এ নিয়ে টেকনাফ উপজেলার সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে নানা প্রশ্নের উদ্রেক দেখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলী আকবর সাজ্জাদ টেকনাফ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কমর্রত ছিলেন। সম্প্রতি সময়ে শিক্ষক সংকট নিরসনে ৩ শিক্ষককে কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের অফিস আদেশের স্মারক নং-জেপ্রাশিঅ/কক্স/১৪/১২৩১(৬) এর টেকনাফ নতুন পল্লানপাড়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করেন। ওই আদেশে শিক্ষককে চলতি মাসের যোগদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে টেকনাফ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তারেক আলী ও শাহপরীরদ্বীপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এনাম উল্লাহ যোগদান করলেও আলী আকবর সাজ্জাদ যোগদান করেনি।

এদিকে এ শিক্ষক নানা তদবীর করে মোটা অংকের টাকা খরচ করে বদলী ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠে অভিযোগ উঠে।
জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট করে ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের জিম্মি করে ওই বিতর্কিত শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে নানা অবৈধ সুবিধা হাসিলে ব্যস্ত থাকত। তাদের অত্যাচারে এক প্রকার অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল টেকনাফ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক‘শ শিক্ষক-শিক্ষিকা। ওই শিক্ষকরা কথায় কথায় নিরীহ শিক্ষকদের বদলীসহ চাকরিচ্যুত করবে বলে প্রকাশ্যে হুংকার ছড়াত।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ধর জানিয়েছেন, টেকনাফ পল্লানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ শিক্ষকের মধ্যে ২জন যোগদান করলেও একজন এখনো যোগদান করেনি। তিনি বিষয়টির খোজঁ-খবর নিয়ে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

টেকনাফের বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাধারনণ শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, সরকারী নির্দেশ অমান্য করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে ওই বিতর্কিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, এত স্পর্ধা তাদের! আসলেই তাদের খুঁটির জোর কোথায়?

সরকারী আদেশ মোতাবেক নির্দিষ্ট কর্মস্থলে যোগদান না করার কারণ জানতে চাইলে আলী আকবর সাজ্জাদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে চিকিৎসা ছুটি নিয়েছেন।

তবে কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো: মামুন কবির জানিয়েছেন, এই ৩ শিক্ষকের যোগদান করার কথা, কেন যোগদান করেনি তা খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার একমাত্র পল্লানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৮শ’ ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করছে।মাত্র ৪জন শিক্ষক নিয়ে এ বিদ্যালয় চলছে। এতে চরম শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে জরুরী ভিত্তিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: মামুন কবির ২ জুলাই ৩ শিক্ষককে যোগদানের আদেশ দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন