টেকনাফে সাড়ে ৯ হাজার ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা দম্পতি আটক


রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে অবৈধভাবে বসবাস করা মিয়ানমারে বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা (FDMN) অপরাধীর ডেরায় রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ মানব পাচারকারী রোহিঙ্গা দম্পতিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রবিবার (৫ অক্টোবর) টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল আশিকুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। আটককৃত দম্পতি টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদে বসবাসকারী মাবুদ কামালের পুত্র মোহাম্মদ আইয়ুব (৩৭),ও তার স্ত্রী রাবিয়া (৩৫)।
অধিনায়ক লে. কর্ণেল আশিকুর রহমান জানান, মিয়ানমার থেকে পাচার হওয়া ইয়াবার একটি চালান টেকনাফ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ এলাকায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি সদস্যরা একটি বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিবার ভোর রাত আড়াইটার দিকে বিজিবি অধিনায়কসহ টেকনাফ ব্যাটেলিয়ানের আরো একাধিক টহল দল ইসলামাবাদ এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু করে। এ সময় ইসলামাবাদ এলাকার জনৈক নেজাম নামক এক ব্যক্তির ভাড়া বাসায় তল্লাশি চালিয়ে মোহাম্মদ আইয়ুব (৩৭) এবং তার স্ত্রী রাবিয়া (৩৫)-কে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, তাদের স্বীকারোক্তি এবং বিজিবি’র বিশেষ ডগ স্কোয়াডের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাসার ভিতরে অতি সতর্কতার সঙ্গে লুকিয়ে রাখা হয়েছে অবৈধ মাদক ইয়াবা। এসময় আইয়ুবের বাসা থেকে ৯ হাজার ৪’শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন পেশার আড়ালে মূলত মাদক পাচার ছিলো আইয়ুবের মুখ্য উদ্দেশ্য।
আটক মোহাম্মদ আইয়ুব জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পের বাইরে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। সে আরো জানায়, ক্যাম্পের নির্দিষ্ট ঠিকানায় না থেকে রাজমিস্ত্রি পেশার আড়ালে ইসলামাবাদ এলাকার একাধিক বাসা পরিবর্তন করে ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল। মাদক কারবারি ঈসমাইলের সহযোগী এবং মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান এনে একাধিক হাত বদলে স্থানীয় ও অন্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিত আইয়ুব। তার স্ত্রী রাবিয়াও এই অবৈধ কার্যক্রমে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে।
মাদক ব্যবসার অপরাধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ধৃতদেরকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর এবং তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন, মিয়ানমার হতে বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট ক্যাম্প রয়েছে। তারা এভাবে ক্যাম্পের বাইরে অবৈধভাবে বসবাস এবং মাদক পাচারের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়া সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য এক বড় উদ্বেগের কারণ।
বিজিবি অধিনায়ক লে কর্ণেল আশিকুর রহমান আরও জানান- এঘটনায় মাদক কারবারি ইসমাইলের খোঁজে অভিযান চলছে। তাকে এই মামলায় পলাতক আসামি করা হয়েছে। তিনি এই সফল মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানটি সীমান্ত সুরক্ষা ও যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে বিজিবি’র জিরো টলারেন্স নীতিতে অবিচল থাকার প্রতিফলন। FDMN পরিচয়ে ক্যাম্পের বাইরে অবৈধভাবে বসবাস করে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি অব্যাহত থাকবে।

















