parbattanews

টেকনাফে ৮২ হাজার চারা গাছ ধ্বংস করে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপন

টেকনাফ প্রতিনিধি:

অদৃশ্য শক্তির উস্কানিতে রোহিঙ্গারা রাতের আঁধারে ধ্বংস করেছে অংশীদারিত্বে সৃজিত ৭৫ একর সামাজিক বনায়ন। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে রোপিত ৮২ হাজার চারাগাছ। এতে ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের ক্ষতি হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা।

শনিবার(২৫ নভেম্বর) ভোর রাত ৩টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী বনবীটের আওতাধীন নয়াপাড়ায় বনভূমিতে সৃজিত অংশিদারী সামাজিক বাগানে এঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আকষ্মিকভাবে রাতের আঁধারে সৃজিত সামাজিক বাগানে বসতি গড়তে খুঁটি স্থাপন করেছে। খবর পেয়ে ভোর ৫টার দিকে বনবিভাগ, সিপিজি ও অংশীদারিত্বের সদস্যরা দুই ঘন্টাব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে দেয়। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক রোহিঙ্গা মোবাইলের মাধ্যমে অদৃশ্য ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে এবং তাদের উস্কানিতে ফের হাজার হাজার রোহিঙ্গা দলবদ্ধ হতে থাকে।

এক পর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে ওই রোহিঙ্গারা সৃজিত সামাজিক বাগানের জমিতে বাধা তোয়াক্কা না করে বাসা তৈরি করতে মাটি খুঁড়াখুড়ি শুরু করে। জনবল কম হওয়ায় বাধ্য হয়ে বনবিভাগের লোকসহ সিপিজি ও অংশীদার সদস্যরা ফিরে আসে। এতে অংশগ্রহণ করেন, মোচনী বন বীটের এফজি সালাহ উদ্দিন, পলাশ ভৌমিক, সামাজিক বনায়নের অংশীদার কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বদিউর রহমান, অর্থ সম্পাদক মো. ইসমাইলসহ বন বিভাগ, পাহারা দল (সিপিজি) ও সৃজিত বাগানের অংশীদার কমিটির সদস্যরা।

সৃজিত বাগানে অংশীদারে থাকা সদস্যরা জানান, গত জুন মাসে ৭৫ একর জমিতে ২০ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বিভিন্ন জাতের ৮২ হাজার চারা রোপন করা হয়েছিল। মিয়ানমারে ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরু হলে রোহিঙ্গারা এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিলেও এতোদিন পর্যন্ত ওই বাগানে কোন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়নি। অদৃশ্য শক্তির ইশারা ও উস্কানিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গারা রাতের আঁধারে বাগানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কারণে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির পাশাপাশি বনভূমি ধ্বংস ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ের যে অংশটুকু গাছ গাছালিতে ভরপুর সে অংশটাও রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাচ্ছে। শীঘ্রই এর বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

এব্যাপারে সৃজিত বাগানের অংশীদার কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ইতিমধ্যে কৃষি ও লবণ উৎপাদনের অনেক একর জমি তাদের আশ্রয়ে চলে গেছে। এতে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন আমরা। এরপরও হঠাৎ করে রাতের বেলায় এক সাথে প্রায় ২ হাজার পরিবার সৃজিত সামাজিক বাগান দখল করে বসতি স্থাপনের তোড়জোড় শুরু করেছে। তা খতিয়ে দেখা না হলে ভবিষ্যতে মারাত্মক হুমকীর মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীঘ্রই এসব রোহিঙ্গাদেরকে বনভুমি থেকে উচ্ছেদ করে সৃজিত সামাজিক বাগানটি রক্ষার আবেদন করছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর বার বার জানানো হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সৃজিত সামাজিক বাগানের উপকার ভোগীরা। দ্রুত এর বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

টেকনাফ বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা তাপস কান্তি জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version