টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকছে আমেরিকান গরু

fec-image

টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে আমেরিকার উন্নত জাতের গরু। তবে, তাতে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, বৈধভাবে খামারিরা সরকারকে গরু প্রতি ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা কর দিয়ে গরু আনে। একই গরু তথ্য গোপন করে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ছে বৈধ খামারিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ দিয়ে ট্রলারে করে গত এক বছরে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে আমেরিকা, ফ্রান্স ও ইটালির উন্নত জাতের গরু। সাধারণত এসব গরু বিমানে করে সরাসরি আমেরিকা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এতে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব পায়। কিন্তু টেকনাফের ২ জন অসাধু ব্যবসায়ির সহযোগিতায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকার একটি সিন্ডিকেট মিয়ানমারের গরুর সাথে বিদেশি এইসব গরু বাংলাদেশে আনছে।

সীমান্তের ব্যবসায়িরা বলছে, মিয়ানমারের গরুর মতো নামমাত্র ৫০০ টাকা রাজস্ব দিয়ে এসব গরু বাংলাদেশে আনছে।

অভিযোগ রয়েছে, মোঃ সৈয়দ ও ইসমাইল নামে দুইজন গরু ব্যবসায়ী এই কারবারির সাথে জড়িত। তারা তথ্য গোপন করে ট্রলারে করে থাইল্যান্ড থেকে এইসব গরু বাংলাদেশে আনছে। তাদের মাধ্যমে মূলত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু প্রভাবশালী এইসব গরু অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করাচ্ছে। এতে করে লোকসানের মুখে পড়ছে আমেরিকা থেকে গরু আমদানি করা দেশের বড় বড় খামারীরা।

টেকনাফের গরু ব্যবসায়ী মোঃ ছৈয়দ ৫টি গরু আনার কথা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য হলো- মিয়ানমার থেকে ট্রলারে কি গরু আসে সেটি তারা ট্রলার পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত জানে না। মিয়ানমারের গরু হিসেবেই এইসব গরু আসে। তাই গরু প্রতি ৫০০ টাকা কাস্টমস দেয়া হয়।
আরেক গরু ব্যবসায়ী মোঃ ইসমাইল বলেছেন, চট্টগ্রাম ও ঢাকার কয়েকজন খামারী থাইল্যান্ড থেকে গরু কিনে মিয়ানমারে আনে। মিয়ানমারে থেকে বাংলাদেশে গরুর ট্রলারে এইসব উন্নত জাতের গরু আনা হয়। তাতে তাদের কোন হাত নেই। এইসব গরুর টেক্স কতো সেটিও তিনি জানেন না বলে মন্তব্য করেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফের ট্রলারের গরু আনা ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচার, মানবপাচার ও হুন্ডি ব্যবসার অভিযোগ আছে। সেইসব চিহ্নিত ব্যবসায়ীরাই তথ্য গোপন করে মিয়ানমারের গরুর সাথে বিদেশি গরু বাংলাদেশে আনছে।

ঢাকার এসকে এগ্রোর সত্বাধিকারী হাসান শাহীন বলেন, ঢাকার খামারিরা বৈধপথে সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব দিয়ে আমেরিকা থেকে গরু আনে। একই গরু মাত্র ৫০০ টাকা রাজস্ব দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে সাগর পথে বাংলাদেশে আসছে। এতে ঢাকার খামারিরা প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ছে। এইভাবে রাজস্ব কম দিয়ে থাইল্যান্ডের গরু দেশে আসলে অনেক খামারি পথে বসবে মন্তব্য তার।

এই বিষয়ে টেকনাফের ২ বিজির উপঅধিনায়ক মেজর রুবায়েছ কবির বলেন, মিয়ানমারের গরুর ট্রলারে করে আমেরিকান বা অন্য কোন ভিন দেশের গরু আনার তথ্য তাদের কাছে ছিলোনা। এখন থেকে এসব গরু আমদানির পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, স্থলবন্দর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন