parbattanews

টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে পেয়াঁজ আমদানি অব্যাহত

শুল্ক কর ছাড়াই এবং বন্দর চার্জ দিয়ে মিয়ানমার থেকে পেয়াঁজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বাংলাদেশে পেয়াঁজ রপ্তানী বন্দ করে দিলে, খোলা বাজার প্রতি কেজি পেয়াঁজের দাম ২শত টাকায় বিক্রি হয়েছিল এবং সংকট মোকাবেলায় টেকনাফ স্থল বন্দর ব্যবহারকারী আমদানি ও রপ্তানী কারক ব্যবসায়ীরা ২০১৯ সালের সেপ্টম্বর মাসে মিয়ানমার থেকে পেয়াঁজ আমদানি পুরোদমে শুরু করে এবং ধারা এখনো অব্যহত রয়েছে।

সম্পূর্ন কাস্টমস শুল্ক কর ছাড়াই পেয়াঁজ আমদানি হয়ে দেশের আভ্যন্তরে চলে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিটন পেয়াঁজ ৩ হাজার টাকা করে বন্দরচার্জ দিয়ে ব্যবসায়ীরা বাজারজাত করছে।

প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে কার্গো ও ট্রলার বোঝাই পেয়াঁজ স্থল বন্দরের জেটিতে ভিড়ছে। ২০ ফেব্রুয়ারি এ প্রতিবেদক টেকনাফ স্থল বন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

তথ্য মতে স্থল বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে পেয়াঁজ শীর্ষ রয়েছে। গুদাম ছাড়া ও স্থল বন্দর চত্তরে খোলা আকাশের নীচে পড়ে আছে পেয়াজের স্তুপ। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২শত পেয়াঁজ বোঝায় ট্রাক স্থল বন্দর ছেড়ে দেশান্তরে উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছে। অতিরিক্ত জেটি এবং ক্রেইন না থাকার কারণে পেয়াঁজ দ্রুত খালাস পাচ্ছে না।

শ্রমিক দিয়ে কার্গোবোট থেকে পেয়াঁজ খালাস হচ্ছে ধীর গতিতে। ফলে পেয়াঁজে পচন দেখা দেয়। পেয়াঁজ আমদানির পাশাপাশি কাট, আদা, মাছ ও শুটকী একই সাথে খালাস হচ্ছে। মাত্র ২টি জেটি দিয়ে এসব পণ্য খালাস হলেও জেটিতে পেয়াঁজ বোঝাই জাহাজ ও কার্গোবোট জট সৃষ্ঠি হয়।

মালামাল দ্রুত খালাস করতে গিয়ে সিরিয়াল বানিজ্য পড়তে বাধ্য হয় ব্যবসায়ীদের। যার করণে মালামাল লোড আনলোড করতে দেরী হলে পেয়াঁজ পচনশীলতা দেখা দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যবসায়ীরা অকপটে বলেন, মিয়ানমার থেকে প্রতি কেজি পেয়াঁজ স্থল বন্দরে পৌঁছতে ব্যায় হয় ৪০ টাকা এবং সেই পেয়াঁজ স্থল বন্দরের বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে ৯০ টাকার উপরে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ স্থল বন্দরের ১১ জন আমদানি ও রপ্তানিকারক এবং ১৫ সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা ৪০ টাকার পেয়াঁজ ১০০ টাকার চেয়ে বিক্রি করে অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। পেয়াঁজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্ঠি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা ঐসব টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। যার কারণে হঠাৎ ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হয়।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফের ১৩ জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কালো তালিকা তৈরী করা হয়। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন স্থল বন্দরে ৬ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এর সাফল্যের মূখ দেখছে না। এ দিকে স্থাল বন্দরে আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৭ ফেব্রুয়ারি দু ব্যবসায়ীর মধ্যে মারামারী সংঘঠিত হয়। এতে সাদ্দাম নামের একজন ব্যবসায়ী প্রতিপক্ষের হামলায় আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থল বন্দরে উদ্ভিদ জাতীয় পণ্য রোগমুক্ত এবং মানসম্মত আমদানি পণ্য কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য স্থায়ী কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা থাকলেও মাছ আমদানি ক্ষেত্রে নেই। অনেক সময় মিয়ানমার থেকে আমদানি হয়ে আসা ঐসব মাছ পরীক্ষা ছাড়াই ঢুকছে। পরে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর রোগমুক্ত ছাড়পত্র দিয়ে বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে।

উক্ত মাছের আমদানি কারক মহেশখালীর মগবাবু এবং তিনি থাকেন ঢাকায়। এর নিয়ন্ত্রন করছেন, টেকনাফ পৌর এলাকার এক ব্যবসায়ী।

সূত্রে আরো জানা গেছে, টেকনাফ স্থল বন্দরে যে, ক’জন সিএন্ডএফ, ব্যবসায়ী তারা অল্প সময়ে কোটিপতির কাতারে। বিষয়টি দুর্নীতি দমন বিভাগকে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।

এ ছাড়া স্থল বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের স্থল বন্দরে ৪ জন মাঝির পোয়া বারু চলছে। এসব মাঝিরা নাকি আকাম কুকামের সাথে জড়িত। এর মধ্যে জনৈক্য মাঝি সবার শীর্ষে।

সচেতন ব্যবসায়ীদের মতে পেয়াঁজের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। নাহলে বাজারে পেয়াঁজের দাম কমবেনা। ৪০ টাকা দামের পেয়াঁজ ১শত টাকার চেয়ে বেশী নিয়ে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করছে ঐসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। সামনে রমজান এ নিয়ে ভোক্তারা চিন্তিত।

Exit mobile version