ড. খলিলুর রহমান: সাফল্যের অনন্য দৃষ্টান্ত ও কূটনৈতিক নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল নাম
ড. খলিলুর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারে যোগদানের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ব্যতিক্রমী মেধা ও যোগ্যতার কারণে তিনি দেশের প্রথম নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
তার কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৭৮-৭৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকে নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০-৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে তিনি আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
১৯৮৩-৮৫ সালে ড. রহমান দক্ষিণ এশিয়া বিভাগ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বদলি হয়ে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্বল্পোন্নত দেশগুলির (এলডিসি) মুখপাত্র হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
জাতিসংঘে দীর্ঘ ও সফল অধ্যায়
১৯৯১ সালে তিনি জেনেভায় জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আঙ্কটাড) বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। জাতিসংঘে দীর্ঘ ২৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি অর্থনীতি, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী কার্যালয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক প্রধান
আঙ্কটাড-এর প্রযুক্তি বিভাগ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি বিশ্লেষণ গ্রুপের প্রধান
স্বল্পোন্নত দেশগুলির কর্মসূচির প্রধান
ড. রহমান জাতিসংঘের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা ও কর্মসূচি তৈরিতে নেতৃত্ব দেন। ২০০১ সালে ব্রাসেলস স্বল্পোন্নত দেশগুলির সম্মেলনে শুল্ক ও কোটা মুক্ত রপ্তানি সুবিধা প্রদানের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে তার নেতৃত্বে তৈরি কর্মপরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. রহমান ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. খলিলুর রহমানের কর্মময় জীবন তার মেধা, অধ্যবসায় এবং নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।