স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাক ঢোল আর সানাইয়ের সুরে সুরে মুখরিত হয়ে উঠে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার জনপদ। চৈত্রের শেষ দু‘দিন ও বৈশাখের পহেলা দিনেই ত্রিপুরা সম্প্রদায় আনন্দে মাতোয়ার হয়ে উঠে বৈসু পালনে। এবারের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ (পাতা বাহা)’র আয়োজনটিও ছিল জাঁকজমক। বুধবার সকাল ৭টা থেকেই সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী সাজে নেচে গেয়ে পাতা বাহা (নববর্ষ) পালনের র্যালিটি ছিল বেশ উপভোগ্য।
ত্রিপুরাদের বৈসু: ত্রিপুরাদের বৈসুর প্রধান আকর্ষণ গরিয়া নৃত্য। ত্রিপুরা সম্প্র্রদায় সনাতন ধর্মাবলম্বী হলেও উৎসবের আমেজে তাদের মাঝে রয়েছে ভিন্নতা। এই ভিন্নতার প্রধান আকর্ষণ গরিয়া নৃত্য। জুম দেবতাকে খুশী করতেই এই গরিয়া। ত্রিপুরাদের মূল পেশা কৃষি ও জুম চাষ। আর গরিয়া হচ্ছে জুম দেবতা। তাদের বিশ্বাস গরিয়া দেবতার পূজা দিয়ে দেবতাকে খুশী করতে পারলেই পারিবারিক, পেশা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
তাই পানছড়ির মদন কার্বারী পাড়া এলাকার ২৯ জন তরুণ মিলে বাদল ত্রিপুরার নেতৃত্বে দল বেধে গরিয়া নৃত্যর তালে তালে ঘুরে বেড়ায় পানছড়ির ত্রিপুরা পল্লীগুলোতে। আর ত্রিপুরা সসম্প্রদায়ের গৃহস্তরাও তাদের সাধ্যমত যাই পারে উৎসর্গ করে দেবতার নামে। লাল রঙের টি-শার্ট পরা তরুণদের গরিয়া নৃত্য উপভোগ করতে তাদের পিছনে পিছনে এবাড়ি ওবাড়ি ছুটে বেড়ায় আবাল বৃদ্ধ বনিতারা।
সাঁওতালদের পাতা বাহা: বৈশাখী দেবতা পূজা দিয়েই শুরু হয় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের পাতা বাহার সূচনা পর্ব। এ দিনে চেংগী নদীতে বৈশাখী দেবতার পূজা দেয় সাঁওতাল সম্প্রদায়। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই সাঁওতাল জনগোষ্ঠী ঘর সাজানো, ঐতিহ্যবাহী কাণ্ডাখিলা, আ-উপড়ি ও নৃত্য দং, লাকড়ে, ছুরহাই ইত্যাদির আয়োজন করে থাকে। তাছাড়া ময়নামতি সাঁওতাল ও মালতী সাঁওতালের গানে গানে বিমল, বাবুল, সুজন, ঝিসু, খোকন ও হোপনা সাঁওতালের নৃত্য র্যালিকে উপভোগ্য ও প্রানবন্ত করে তোলে।
বলা যায় সবমিলে পানছড়ির জনপদ এখন উৎসব পালনে মাতোয়ারা। সকলের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ ও বৈসাবি আনন্দ উপভোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে বসবাসরত পাহাড়ী বাঙ্গালিরা আনন্দ একার হয়ে যায়।