parbattanews

তিন পাত্তি গোল্ড গেমে আসক্ত পানছড়ির কলেজ-বিদ্যালয় ছাত্ররা


পানছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায় উঠতি বয়সি যুবক থেকে শুরু করে কলেজ-বিদ্যালয় পড়ুয়ারা আসক্ত হয়ে পড়েছে এ্যান্ডোয়েড ফোনের তিন পাত্তি গোল্ড গেমস নামের তাস খেলায়।

বর্তমানে কিছু শ্রেণির মানুষ এই খেলার চিপস/কয়েন বিক্রি পেশা হিসেবে করে নিয়েছে টাকা ধানদার অসাধু  সিন্ডেকেট।

এই অসাধু শ্রেণির ব্যবসায়ীরা গেমটিকে অনলাইন জুয়ায় পরিণত করায় অভিভাবকমহল হতাশাগ্রস্থ। যার ফলে কোমলমতি শিশুরা বাড়ি থেকে মা-বাবার কাছে বিভিন্ন বায়নার মাধ্যমে ৪০/৫০ টাকা নিয়ে ক্রয় করছে ০১ (এক) কোটি চিপস/কয়েন।

প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পানছড়ি বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে একটু নজর দিলেই দেখা যায় তিন পাত্তি গেমের চিপস/কয়েন বেচাকেনার মূল চিত্র। অভিজ্ঞমহর থেকে জানা যায়, অনেকে এই তিন পাত্তি গোল্ড খেলে চিপস/কয়েন বেচাকেনা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

পানছড়ির কয়েকজন বিদ্যালয় পড়ুয়া (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানায়, প্রথম গেমটি বন্ধুর মোবাইল থেকে শেয়ারইটের মাধ্যমে নিয়ে খেলা শুরু করে। খেলতে খেলতে যখন কয়েন হেরে যায় তখনই মাথা খারাপ হয়ে বসে। পরে বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারে পানছড়িতে ৫০ টাকার বিনিময়ে ০১ (এক) কোটি চিপস/কয়েন বিক্রি হয় এবং ফেসবুকে গ্রুপ খোলা হয়েছে তিন পাত্তি গোল্ড চিপস সেলার নামে। তাদের সাথে যোগাযোগ করেই চিপস কেনা শুরু হয়।

বিভিন্ন সময়ে মা-বাবা থেকে মিথ্যা কথা বলে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে তিন পাত্তির চিপস কিনে সে সব সময়েই হারে। নিজের একাউন্টে চিপস না থাকলে চিপস কেনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার করেও হারতো গেম খেলে।

বর্তমানে গেমসটি মানসিক সমস্যায় পরিণত হওয়ায় সে লেখা-পড়ায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। সে আরও জানায়, অনেক বন্ধুকে দেখেছি যখন নিজের একাউন্টে চিপস/কয়েন থাকেনা তখন বাড়ি হতে গোপনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র বাজারে বা অন্যের কাছে বিক্রি করে চিপস/কয়েন কিনতে।

সে বলে এ গেমসটি এমন এক খেলা যে একবার খেলেছে সে আর সহজে বের হতে পারেনা এবং এটা তার নেশায় পরিণত হয়। অনেকেই এই গেম খেলে টাকা হারাতে হারাতে মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে লেখাপড়ার অমনোযোগী হয়ে পড়ছে আর কারো কারো হাত টানের অভ্যাসও হচ্ছে।

এ গেমসটি খেলতে ইন্টারনেট কানেকশন যুক্ত অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল সেট ও ফেসবুক আইডির প্রয়োজন। এটি হচ্ছে ৩টি তাসের খেলা। খেলার সবয়েছে বড় কার্ড হলো তিন টিক্কা আর সর্বনিম্ন কার্ড ২৩৫। চিপস/কয়েন শেষ হলেই জরুরী টাকার প্রয়োজন।

তাই পানছড়ির সচেতন অভিভাবকমহল এ ব্যাপারে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি চায়। পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্মা মুহাম্মদ আবুল হাশেম জানায়, এই বিষয়ে কোন আইন এখনও হাতে আসেনি। তারপরও বিদ্যালয়গুলোতে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Exit mobile version