parbattanews

তিন পার্বত্য জেলায় আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে একক প্রতিনিধি দীপঙ্কর তালুকদার

সাতটি পদ খালি রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় কাউন্সিলের পাঁচদিন পর বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে কার্যনির্বাহী সংসদের ৩৯টি শূন্য পদের ৩২টি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তিন পার্বত্য জেলা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে স্থান পেয়েছেন দীপঙ্কর তালুকদার এমপি।

টানা দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পার্বত্যাঞ্চলের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। তবে এখনো ৭টি পদ খালি রয়েছে। ঘোষিত কমিটিতে তিনি সদস্য পদে রয়েছেন। সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতেও একই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দীপঙ্কর তালকুদার পার্বত্যনিউজকে বলেন, আমরা তো কিছু হওয়ার জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ করিনি। তবে নেত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করবো। তিন পার্বত্য জেলা থেকে আপনি একক প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বয়স ৬৮ বছর, রাজনীতির বয়স ৫১ বছর। তিন পার্বত্য জেলায় আর যারা আছে তাদের বয়সই ৫১ হবে কিনা সন্দেহ। তাহলে আমাকে মূল্যায়ন করবে না তো কাকে করবে?

ঘোষিত কমিটিতে নতুন মুখ এসেছে ১২। বেড়েছে নারী নেত্রীর সংখ্যা। বাদ পড়েছেন আগের কমিটিতে থাকা ৯ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী।

এর আগে গত শনিবার ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সংসদের ৪২টি ও ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির ৪০টি পদ ঘোষণা করা হয়। বাকি ১১টি উপদেষ্টা পদ ঘোষণা করার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার তা করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাতে এ তালিকা ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলটির সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, যে সাতটি পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে, সেগুলো হল- সাংগঠনিক সম্পাদক-১, শিল্প ও বাণিজ্য, কোষাধ্যক্ষ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী সদস্য-৩।

গত ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ৯ম বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের।

এদিন ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির ৪২টি পদে নাম ঘোষণা করা হয়। বাকি ৩৯টি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে নেতৃত্ব চূড়ান্ত করতে বুধবার প্রেসিডিয়াম বৈঠক করে আওয়ামী লীগ। এরপর বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যাঁরা

আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে ৭৪ জনের নাম ঘোষণা করা হলো। বাকি সাতটি পদ যেকোনো সময়ে পূরণ করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার রাতে ধানমন্ডির দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার রাতে কমিটির যে ৩২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা হলেন:

সাংগঠনিক সম্পাদক: আফজাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক: শফিউল আলম নাদেল, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক: বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান, তথ্য গবেষণা সম্পাদক: ড. সেলিম মাহমুদ, শ্রম ও জনশক্তি: হাবিবুর রহমান সিরাজ, উপদপ্তর সম্পাদক: সায়েম খান, উপপ্রচার সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম

সদস্য হলেন যাঁরা: আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, খ ম জাহাঙ্গীর, নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, বদরুদ্দিন কামরান, দীপংকর তালুকদার, আমিনুল আলম মিলন, আখতার জাহান, মুশফিক, রিয়াজুল কবির কাওসার, মেরিনা জামান কবিতা, পারভেজ জামান, হুসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সফুরা খাতুন, সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানি চিনু, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।

এর আগে ২১ ডিসেম্বর নির্বাচিত ৪২ জন হলেন:

সভাপতি: শেখ হাসিনা।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য: এই পদে তিনজন নতুন সদস্য এসেছেন। তাঁরা হলেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান এবং শাজাহান খান। বাকিরা সবাই আগের কমিটিতে ছিলেন। কাউকে বাদ দেওয়া হয়নি। তাঁরা হলেন সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, সাহারা খাতুন, মোশাররফ হোসেন, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবদুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মান্নান, আবদুল মতিন খসরু।

সাধারণ সম্পাদক: ওবায়দুল কাদের

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: এ পদে পদোন্নতি পেয়ে নতুন যুক্ত হয়েছেন বিগত কমিটির প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। এ পদে বহাল আছেন মাহবুব উল আলম হানিফ ও দীপু মনি।

দপ্তর সম্পাদক: আগের কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব কুমার বড়ুয়া পদোন্নতি পেয়ে দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন।

প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক: আগের কমিটির দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এসেছেন এই পদে।

সাংগঠনিক সম্পাদক: আগের কমিটির সদস্য এস এম কামাল ও মির্জা আজম পদোন্নতি পেয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল ও আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এবারও একই পদে আছেন। গত কমিটির আরও তিন সদস্য মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এই পদে থাকছেন, নাকি পদোন্নতি বা কমিটিতে থাকছেন, তা পরে জানা যাবে।

সম্পাদক হলেন যাঁরা: আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ স্বপদে বহাল আছেন। আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু পদোন্নতি পেয়ে এ পদে এসেছেন। আগের কমিটিতে সদস্য ছিলেন তিনি। কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন ফরিদুন্নাহার লাইলী। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন সুজিত রায় নন্দী। বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন দেলোয়ার হোসেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর। নতুন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন মেহের আফরোজ চুমকি। আগের কমিটিতে তিনি ছিলেন না। মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে বহাল আছেন হারুন অর রশীদ। শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন শামসুন নাহার চাঁপা। সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে বহাল আছেন অসীম কুমার উকিল। স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক পদে ডা. রোকেয়া সুলতানা। আগের কমিটিতে একই পদে ছিলেন তিনি।

Exit mobile version