parbattanews

থানচির রেমাক্রীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু

বান্দরবানে থানচি উপজেলা দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের মিয়ানমার বাংলাদেশ দ্বীপ সীমান্তে ৪ থেকে ৫ টি পাহাড়ি গ্রামে গত এক সপ্তাহ যাবত ম্যালেরিয়া সাথে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে পাড়ার প্রধান কারবারিসহ দুই জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পৃথকভাবে ৪-৫ পাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এ সব রোগে আগের মতো আতংঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের গতকাল শুক্রবার একটি চিকিৎসক টিম পাঠানো হলেও নিয়ন্ত্রণ আনতে হিমশিম খাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় ঔষধ, স্যালাইন প্যাকেট, অপ্রতুল বলে জানান এলাকা স্থানীয়রা। তবে এ সব রোগে আগের মতো আতঙ্ক ও ভয় নেই। স্বাভাবিকভাবে সঠিক ঔষধ, চিকিৎসা সেবা, ও সচেতনভাবে চললে সুস্থ হবে বলে মত দেন সচেতন মহল।

রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি জানান, রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬ – ৯ নং ওয়ার্ডে ঙাঁরেসা পাড়া, ম্রংগং পাড়া, ইয়াংরে পাড়া, ইয়াংব পাড়াসহ ৪-৫ টা পাহাড়ি গ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত ৭ জুন একজন, ৯ জুন একজনসহ মোট দুই জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তাদের জানানো পর দ্রুত চিকিসকের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। এলাকার স্থানীয়রা উঁচু পাহাড়ে উঠে নেটওয়ার্ক সার্চ করে আমাকে জানালেন চিকিৎসক টিমের মধ্যে যে পরিমাণ প্রয়োজনীয় ঔষধ, স্যালাইন নিয়ে গেছে সেটি আর অবশিষ্ট থাকছে না। ফের পাঠানো চেষ্টা করছি। দুর্গম সীমান্ত অঞ্চল হওয়ায় যাতায়াত অনেক কষ্টসাধ্য । সাংগু নদীর পথে ইঞ্জিন চালিত বোটের মাধ্যমে যেতে হয়।

কী কারণে ডায়রিয়া ম্যালেরিয়া হয়েছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রনি বলেন, পাহাড়ে আগাম বৃস্টিতে ঝিড়ি ঝর্ণাতে ময়লা অবর্জনা পানির ব্যবহার করতে হয়। এ সময়ের পানি গুলি ফুটিয়ে খাওয়ার কথা জনসাধারণের বলা হয়েছে তবুও বর্ষা মৌসুম সচেতনতার অভাব ও অতি গরমে জুমের কাজ করে অতিশ্রমের পিপাসা হলে আগের মতো পানির ব্যবহারের পানিবাহিত রোগ আর ডায়রিয়ার আশঙ্কা বেশি।

পাহাড়ে মশা উপদ্রব বেশি। রাতে মশারি ব্যবহার করলে ও দিনের জুমের কাজ করার সময় ছোট ছোট মশা কামড়ে প্রথমে সাধারণ জ্বর, কাশি, বুক ব্যথাসহ নানান ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। গত কয়েক বছর ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া হয় নি, এ বছরে হচ্ছে। আমরা যথেষ্ট পরিমাণ মোকাবেলা করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন সীমান্তে একটি কমিউনিটি হেলথ্ সেন্টার ও একজন এমবিবিএস চিকিৎসক রাখা বর্তমান সময়ে জরুবি বলে দাবি করেন।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান রনি ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছে। তবে আক্রান্ত সংখ্যা বলা হয় নি তবুও পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রয়োজনীয় ঔষধ স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, মশারি, ম্যালেরিয়া পরীক্ষা জন্য ডিভাইজ কীট, ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত ঔষধ দিয়েছি। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীসহ আমরা সর্বময় মোকাবেলা জন্য প্রস্তুত আছি। তবে দুুর্গম এলাকা বা সীমান্ত অঞ্চল হওয়ায় আমাদের কর্মীরা কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করার প্রস্তুত রয়েছে। শুধু মাত্র জনপ্রতিনিধিরা সহযোগিতা করলেই হবে।

ডা. মুরাদ আরও বলেন, আবহওয়া অনুকূল পরিস্থিতি জন্য মাঝে মাঝে অসুখ-বিসুখ হতে পারে। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। জনগণে দৌড়গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা দিতে বর্তমান সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।

Exit mobile version