parbattanews

থানছিতে থাইল্যান্ড থেকে আনা ২০টি বুদ্ধমূর্তি বিতরণ করা হবে শনিবার

dsc_0040-copy

রুমা প্রতিনিধি:

বান্দরবানের থানছি উপজেলায় বলীপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বলী পাড়ার করুনা শিশু সদনের সংযুক্ত ধাম্মাজেয়া বৌদ্ধ বিহারে শনিবার  দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত হবে।  এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় রীতি-নীতি ও শাসন অনুযায়ী প্রতি বছর আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রতের পরিপূর্ণতায় আসে শুভ প্রবারণা। পরদিন থেকে মাস ব্যাপী শুরু হয়ে আসছে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ এই দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব।  পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের সভাপতি উ: পঞ্ঞা নাইন্দা মহাথেরোর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বোমাং সার্কেলের রাজকুমার উনু শৈপ্রু, থানছি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্য হ্লা চিং মারমা ও রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অং থোয়াই চিং মারমা ও এ্যাডভোকেট বাসিং খোয়াই, জেলা পরিষদের সদস্য থৈ হ্লা মং মারমাসহ পন্ডিত প্রাজ্ঞ ভিক্ষু সংঘ এবং সমাজের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন রাঙ্গামাটির বাঙ্গাহালিয়ার আগাপাড়া বৌদ্ধ অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ উ: ক্ষেমাচারা মহাথেরো।

কঠিন চীবর দানোৎসব ছাড়াও ভিক্ষু সংঘের সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, নতুন বিহার উৎসর্গ ও থাইল্যান্ড থেকে আনীত বুদ্ধমূর্তি বিতরণের বিস্তারিত কর্মসূচি রয়েছে। তার মধ্যে ভোর পাঁচটায় এক মিনিটে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলণ গতবার থেকে নতুন কর্মসূচি হিসেবে করা শুরু হয়েছে।

এদিকে বৌদ্ধমূর্তি বিতরণ বিষয়ে করুনা শিশু সদন‘র অধ্যক্ষ উ: গাইন্ডামালা মহাথের এ প্রতিনিধিকে বলেন বড় আকারে ২০টি বৌদ্ধ মূর্তি এবার এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিতরণ করা হবে। যেগুলোর উচ্চতা প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ফুটের বেশি। থাইল্যান্ড থেকে আনা এসব বুদ্ধমূর্তি তৈরির ক্ষেত্রে এর নৈপণ্যতায় খুবই স্বচ্ছ ও পরিস্কার। এই বুদ্ধমূর্তিগুলো বিহারে অলংকৃত হলে বৌদ্ধ ধর্মপ্রাণ নর-নারীর ধর্মীয় বিশ্বাসে আরো অধিকতর ধর্মের প্রতি অনুপ্রাণিত হবেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

গাইন্ডামালা মহাথেরো আরও জানান, থাইল্যান্ডের এক দানশীল দায়কের দানে এ পর্যন্ত ১১১টি বুদ্ধ মুর্তি আনিয়েছেন। প্রথমবার আনা হয়-২০০৭সালে ৩১টি বুদ্ধমূর্তি। তখন বিভিন্ন কারণে কক্সবাজার উখিয়ায় এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধ বিহারে বিতরণ করা হয়। তখন রংপুর উত্তর বঙ্গে ছয়টি, কুমিল্লায় পাঁচটি, চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে চারটি ও থানছিতে ১২টি বুদ্ধ মূর্তি। তার পরবর্তীর সময়ে পঞ্চমবারের মতো করুনা শিশু সদনের সংযুক্ত ধাম্মাজেয়া বৌদ্ধ বিহার থেকে মূর্তিগুলো বিতরণ হয়ে আসছে। তার ধারাবাহিকতায় এবারও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এই আয়োজন। বুদ্ধমুর্তিগুলো বিতরণের বিশেষ অবদানের জন্য প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও থাইল্যান্ড নিবাসী মি: পোরামা লৌসেথাকাল‘র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার সাফল্য দীর্ঘায়ু মঙ্গল কামনা করেন উ: গাইন্ডামালা।

আয়োজিত অনুষ্ঠান প্রস্ততি বিষয়ে অধ্যক্ষ উ গাইন্ডমালা মহাথেরো আরো জানান, বুদ্ধমূর্তিগুলো থাইল্যান্ড থেকে এক বছর আগে আনা হয়েছে। তবে অনুষ্ঠান সম্পাদনের ব্যয় বহুল। তারপও প্রস্ততির অল্প সময়ে নানা কর্মসূচিতে এ অনুষ্ঠান সামর্থ্যওে মধ্যে সাধ্যমত করার চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এসব বুদ্ধমূর্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রতিবারে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপক সংখ্যক বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রাণ ভিক্ষু সংঘসহ নর-নারীরা উপস্থিতির ঢল নামে। এতে এখানে হাজারের লোকসমাগমে পরিণত হয় এক মিলন মেলা। এবারও সেরকম-ই আশা করছেন স্থানীয় লোকজন।

Exit mobile version