দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আইপি ক্লাব কার্নিভালের আয়োজন করেছে হুয়াওয়ে


আইপি ইন্ডাস্ট্রির আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে আইপি ক্লাব কার্নিভালের আয়োজন করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সল্যুশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এই কার্নিভাল শুরু হয়েছে, যা চলছে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘রিথিংক আইপি, বিল্ডিং দ্য ইঞ্জিন ফর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’।
এই আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪শ’ জন আইপি ক্লাব সদস্য, শিল্প ও অ্যাকাডেমিক বিশেষজ্ঞ এবং আইপি পেশাজীবীরা অংশ নিয়েছন। বিশেষ করে থাইল্যান্ড, হংকং, ভারত, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম থেকে এসব বিশেষজ্ঞ ও পেশাজীবীরা অংশ নিয়েছেন।
কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী প্রযুক্তিবিদরা বোঝানোর চেষ্টা করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শিল্পখাতের আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে উদ্ভাবনী আইপি প্রযুক্তিগুলো কিভাবে ব্যবহার করা হয়। কার্নিভালে হুয়াওয়ের মুখপাত্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথমবারে মতো আইপি ক্লাবের সদস্য হওয়ার সুবিধাগুলো তুলে ধরেন। একটি পেশাগত, উন্মুক্ত, বিশ্বন্ত এবং সম্মানজনক আইপি প্রযুক্তি নির্ভর যোগযোগ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে এই আয়োজনকে তিনি একটি অন্যতম মাইলস্টোন হিসেবে উল্লেখ করেন।
কার্নিভালে আইডিসি’র নেটওয়ার্ক ইনফ্রাসট্রাকচার বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোহিত মেহরা তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি দেখানোর চেষ্টা করেন, কিভাবে বিদ্যমান প্রযুক্তি যেমন: এআই, বিগ ডেটা এবং ক্লাউড নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
তিনি জানান, বিদ্যমান অ্যাপ্লিকেশনসগুলো নিরাপদে ও দক্ষতার সাথে ব্যবহারের জন্য নেটওয়ার্ক মূল ভূমিকা পালন করে। আর এজন্যই নেটওয়ার্কের রূপান্তর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুরাতন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ডিজিটাল রূপান্তর সম্ভব না। তাই ভবিষ্যতে বুদ্ধিবৃত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
কার্নিভালে ডিজিটাল রূপান্তরের সাথে সাথে কিভাবে আইপি ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাবে সে বিষয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন হুয়াওয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান ডিজিটাল কর্মকর্তা ও পরামর্শক মিশেল ম্যাকডোনাল্ড। এমনকি আইপি প্রযুক্তিতে হুয়াওয়ের আধুনিক গবেষণা ও প্রশিক্ষেণের বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ওয়াই-ফাই ৬, এআই ফেব্রিকস, এসআরভি৬ উদ্ভাবনে হুয়াওয়ে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করছে ও মার্কেটে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এছাড়া ধারাবাহিক উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের কারণে এই খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারছে। হুয়াওয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে এবং শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিবৃত্তিক আইপি নেটওয়ার্ক সল্যুশন সরবরাহ করবে।’
আইইই ৮০২.১১এএক্স (ষষ্ঠ প্রজন্মের ওয়াই-ফাই) টাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. ওসামা আবুল মাগদ কার্নিভালে সর্বাধুনিক ওয়াই-ফাই ৬ এর বিবর্তন এবং এর উন্নয়নে হুয়াওয়ের তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘৮০২.১১এএক্স এর উন্নয়নে হুয়াওয়ে মোট ২৪০টি প্রস্তাব জমা দিয়েছে, যা মোট প্রস্তাবের ১৫ শতাংশ এবং সব ভেন্ডদের মধ্যে প্রথম।’
পরে হুয়াওয়ের ডাটা কমিউনিকেশন্স প্রোডাক্ট লাইনের ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক ডোমেইন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. লি জিং এই খাতের প্রথম বাণিজ্যিক ওয়াই-ফাই ৬-পি৭০৬০ডিএন চালু করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত টলি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী আইপি খাতে ওয়াই-ফাই ৬ এর বাণিজ্যিকীকরণে হুয়াওয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে। টলি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, হুয়াওয়ের ওয়াই-ফাই ৬ এর পণ্যগুলো পরীক্ষায় সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।’
ভবিষ্যতে হুয়াওয়ের আইপি ডোমেইন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজাগুলোতে আরও বেশি বেশি প্রযুক্তি ও রিসোর্স সরবরাহ করবে। হুয়াওয়ে ও তার অংশীদারদের সহায়তায় এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক সংযোগ দেওয়া হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল রূপান্তরে গ্রাহকদের সহায়তা করতে এবং একটি সম্পূর্ণ সংযুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্ব গড়তে হুয়াওয়ে সমন্বিত নিউ আইসিটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলাই হুয়াওয়ের উদ্দেশ্য। গ্রাহক-কেন্দ্রিক নতুনত্ব এবং উন্মুক্ত অংশীদারিত্বের দ্বারা পরিচালিত হয়ে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সমাধান পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে যা গ্রাহকদেও টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সুবিধাসমূহ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে যা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে কাজ করে চলেছে। এই বিশাল সংখ্যক কর্মীরা বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।