দাবদাহে পুড়ছে ভারত, দুর্যোগে বিপর্যস্ত পাকিস্তান-আফগানিস্তান

fec-image

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে ভারত। বৃষ্টির জন্য হা-পিত্যেশ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। পশ্চিমবঙ্গের সাত জায়গায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা উঠেছে ৪২ ডিগ্রির বেশি। প্রচন্ড গরমে ভারতবাসী যখন ধুঁকছে, ঠিক একই সময়ে লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যার কবলে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও এর পার্শ্ববর্তী আফগানিস্তান। অতিবৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় এই দুই দেশে এখন পর্যন্ত অন্তত ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড ও কর্নাটকেও তীব্র দাবদাহ চলছে। তাছাড়া, দাবদাহে সবচেয়ে বেশি নাকাল অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে। সোমবার পানাগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পানাগড় ছাড়াও আরও ছয় জায়গায় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল। মেদিনীপুরে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আসানসোলে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বর্ধমানে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ব্যারাকপুর ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাঁকুড়ায় ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কলাইকুণ্ডায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনের তাপমাত্রা।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুষ্ক পশ্চিমা এবং উত্তর-পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। ১৫ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত এই তাপমাত্রার পারদ থাকতে পারে। আগামী চার-পাঁচ দিন পশ্চিমবঙ্গে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকতে পারে। এছাড়া, উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাতাসে আর্দ্রতা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ থাকতে পারে।

অন্যদিকে, গত তিন দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি ও বজ্রপাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। এর মধ্যে পাঞ্জাবে ২২ জন ও বেলুচিস্তানে মারা গেছেন ১২ জন। বাকিরা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মারা গেছেন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে বালুচিস্তানে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার।

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের অবস্থাও ভালো নয়। রাস্তাঘাট কার্যত জলের নিচে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

অন্যদিকে, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ একাধিক প্রদেশ ভয়ংকর বন্যায় ভাসছে বলে জানিয়েছেন তালিবান সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মুখপাত্র আবদুল্লা জানান শেখ।

তিনি জানান, বন্যায় আফগানিস্তানে গত তিনদিনে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬০০-এর বেশি বাড়ি ভেঙে পড়েছে, মারা গেছে ২০০-এর বেশি গবাধি পশু। প্রায় ৮০০ হেক্টর চাষযোগ্য জমি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পশ্চিম ফারহা, হেরাত, দক্ষিনি জাবুল ও কান্দাহারসহ একাধিক প্রদেশ সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এরই মাঝে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েকদিন আরও ভারী বৃষ্টি হবে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন