দীঘিনালায় জেএসএস কর্মী হত্যা: ইউপিডিএফ’র ২৭ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল
দীঘিনালায় জেএসএস (এমএন লারমা) দুই কর্মীকে গুলি করে খুনের পৃথক দুই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ইউপিডিএফ এর প্রধান প্রসীত বিকাশ খীসাসহ ২৭ নেতাকর্মীকে আসামি করে দিয়েছে পুলিশ। এক বছর আগে এই দুই নেতা খুন হন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাদের খুন করা হয় বলে পুলিশ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।
তবে ইউপিডিএফের নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) খাগড়াছড়ির বিচারিক আদালতে অভিযোগপত্রটি জমা দেওয়া হলেও গ্রহণের শুনানির তারিখ পড়েনি। ২০১৮ সালের ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের পোমাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জেএসএস (এমএন লারমা) কর্মী মনজুর আলমকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়।
পরের দিন তার স্ত্রী সুজাতা চাকমা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। অভিযোগপত্রে ইপিডিএফ পিয়াস চাকমা ওরফে সাধন চাকমা ও পূর্ণ কান্তি চাকমাকে আসামি করা হয়।
এতে বলা হয় মনজুর আলম একসময় ইউপিডিএফ এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, পরবর্তী সময়ে তিনি জেএসএস এমএন লারমায় যোগ দেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন আসামি সুমন চাকমা জড়িত থাকার তথ্য না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করে পুলিশ।
মঞ্জুর আলম খুনের এক মাসের মাথায় গত বছরের ৭ অক্টোবর দীঘিনালায় দুর্গম শিমুলতলী এলাকায় জেএসএস এমএন লারমা পক্ষের যুব সমিতির সদস্য মন্জু চাকমাকে (৩৮) গুলি করে হত্যা করা হয়। দুদিন পর তার ছেলে প্রনিস চাকমা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ২৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দেয়, সঠিক নাম ঠিকানা না পাওয়ায় পাঁচ জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ইউপিডিএফের লোকজন মঞ্জুরকে হত্যা করে বলে তদন্তে উঠে আসে। নিহত দুজনের পরিবার এখনও আতঙ্কে রয়েছে। তারা মামলা নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
দুটি হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দীঘিনালা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউপিডিএফ পক্ষের লোকজন প্রতিহিংসামূলক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। দুই মামলার অভিযোগপত্রে আসামিদের সবাই ইউপিডিএফ কর্মী।
ইউপিডিএফ জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা দাবি করেন, তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য এই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে তাদের ৭ নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হলেও এই ঘটনায় কোনো অগ্রগতি নেই। এখন দোষী না হলেও নেতাকর্মীদের নামে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।