parbattanews

দীঘিনালায় ইউপিডিএফ নেতার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে জেএসএস

নিজস্ব প্রতিনিধি, দীঘিনালা:
দীঘিনালায় এক ইউপিডিএফ(ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) এর প্রসীত গ্রুপের এক নেতার বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দিয়েছে জেএসএস সংস্কারের একটি গ্রুপ। গত বুধবার রাত সাড়ে ন’টায় উপজেলার দক্ষিণ বড়াদম এলাকার রাঙ্গিপাড়া এলাকায় এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

ইউপিডিএফ’র ওই নেতার নাম প্রজিত চাকমা। সে মহালছড়ি উপজেলা ইউপিডিএফ’র উপজেলা সংগঠক। অগ্নিসংযোগের আগে তার স্ত্রী এবং এক মেয়ে (৭) বাড়িতে ছিল। পরে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রাত সাড়ে ন’টায় প্রথমে দু রাউণ্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। গুলির কিছুক্ষণ পর ১০/১৫ জনের এক দল দুর্বৃত্ত¦ দল বাড়ির চারপাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় মুহুর্তের মধ্যেই পুরো বাড়ি আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর আগে গুলি করার পর পরই বাড়িতে থাকা প্রজিত চাকমার স্ত্রী সীমা চাকমা ও মেয়ে পারমি চাকমা (৭) আর্ত্বক্ষার্থে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে প্রতিবেশী একজন নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ঘটনার আগে প্রজিত চাকমার স্ত্রী সীমা চাকমা এবং তার এক মেয়ে পারমি চাকমা বাড়িতে ছিল। পরে গুলির শব্দে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। ফলে অগ্নিসংযোগ করার পর তারা কিছুই রক্ষা করতে পারেনি।

এদিকে ইউপিডিএফ’র প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফতে জেএসএস-সংস্কারপন্থিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান, জেএসএস সংস্কারের তথাকথিত সেকশন কমান্ডার বিধান চাকমার নেতৃত্বে প্রজিত চাকমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার আগে বিধান চাকমার মুঠোফোন থেকে হুমকি প্রদান করা হয়। পরে সাড়ে ন’টায় ১০/১৫ জনের একটি বন্দুকধারী দল বাড়ি ঘিরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

বিবৃতিতে তিনি কালো প্রিয় চাকমা জেএসএস সংস্কারবাদী চার কুচক্রী সেনাবাহিনীর মদদে ও পৃষ্ঠপোষকতায় খুন, অপহরণ, এলাকা থেকে ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের উচ্ছেদ এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ‘জনগণের অধিকারের পক্ষে একটি মিছিল কিংবা সমাবেশ-মানববন্ধন দূরের কথা, সামান্য একটা বিবৃতি পর্যন্ত তারা দিতে নারাজ। অথচ জনগণের জন্য আন্দোলনের কথা বলে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলে সংস্কারবাদী নেতারা সেই টাকা দিয়ে চার-পাঁচ তলা বাড়ি নির্মাণ ও ব্যবসা বাণিজ্য করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত।’

সংস্কারবাদী চার কুচক্রী পেলে-শক্তিমান-সুদর্শন-অংশুমানকে চরম প্রতিক্রিয়াশীল ও অশুভ শক্তি হিসেবে বর্ণনা করে ইউপিডিএফ নেতা আরো বলেন, ‘সংস্কারবাদীরা আন্দোলন নয়, নিজের জ্ঞাতি ভাইকে খুন ও ক্ষতি করতেই ওস্তাদ। তারা জুম্ম ধ্বংসের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করে চলেছে।’

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুব সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি নলেজ চাকমা জ্ঞান ইউপিডিএফ এর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ইউপিডিএফ বর্তমানে দুভাগে বিভক্ত। তাই তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই ওই বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মো. সামসুদ্দিন ভুইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version