parbattanews

দুই বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় খালাতো ভাই-বোনের যাবজ্জীবন

কক্সবাজারের চকরিয়ায় আপন ভাই-বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। ২০১০ সালে ঘটে যাওয়া চট্টগ্রামে দু’বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আপন খালাত ভাই-বোনকে এ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। একই সাথে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শারমীন ফারজানা লতিফ সাকি (৩৩) ও তার ছোট ভাই মুহাম্মদ ইফতেখার লতিফ সাদি (৩০)। দুইজনের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজরের চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা এলাকার নোয়াপাড়া ও মাস্টার আবদুল লতিফের ছেলে-মেয়ে। তাদের বাবা চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন।

বুধবার (১ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তসলিম উদ্দিন বলেন, দুই বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক দুই ভাই বোনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ভাই ইফতেখার লতিফ সাদিকে ৫০ হাজার টাকা এবং বোন শারমীন ফারজানা লতিফকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও সাত বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১০ অক্টোবর ২০১০ ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার জয়নগর এলাকার একটি বাসায় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল মুবিনের দু’মেয়ে মুনতাহা কারিনা ও সালসাবিল তাসনিমকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এতে দু’বোনের শরীর এসিডে ঝলসে যায়। ঘটনার সময় দুই বোনের বয়স যথাক্রমে ২০ ও ১৬ বছর ছিল।

দুই ভিকটিমের পিতা আনোয়ারুল মুবিন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এসিড নিক্ষেপের ঘটনার ১০ দিন পর মানতাহার কারিনার বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল। তদন্ত শেষে পুলিশ ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ কারিনা ও তাসনিমের খালাতো ভাই সাদি ও সাদির বোন সাকিকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে মোট সাক্ষী ছিল ২৫ জন। ২৮ এপ্রিল ২০১১ তৎকালী মহানগর দায়রা জজ এ কে এম শামসুল ইসলামের আদালত পুলিশের দায়ের করা চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করেন। ওই বছর ৪ ও ৫ মে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

পুলিশের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে সাকির ছেয়ে তার খালাতো বোন কারিনা বয়সে ছোট এবং সুন্দরী। তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল চট্টগ্রাম কলেজের এক প্রভাষকের সাথে। এতে ঈর্ষাকাতর হয়ে সাকি এসিড ছুঁড়ে মারে। আর তাকে এসিড সংগ্রহে সহায়তা করে ভাই সাদি।

ভিকটিম দুই বোনের মা আনার কলি বলেন, আমার মেয়েরা চিকিৎসায় প্রাণ ফিরে পেলেও গত প্রায় একযুগ এক অসহনীয় কষ্ট সহ্য করছি। তারা এখনো পুরোপুরি সুস্থ্ হয়নি। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আশা করবো উচ্চ আদালতে আপিল করলেও এই রায় বহাল থাকবে।

Exit mobile version