দুপুরে সিদ্ধান্ত রাতে প্রত্যাহার
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ জোন নির্দিষ্ট করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি উদ্ভুত বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের বিজিবির উর্মি গেস্ট হাউজ থেকে সীগাল পয়েন্ট পর্যন্ত ১৫০ ফুট এলাকাকে ‘বিশেষ জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানে নারীদের সঙ্গে শুধু শিশুরাই যেতে পারবে, এমন সিদ্ধান্ত ছিল। জেলা প্রশাসন ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির নামে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা লিখে বালুতটে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোনের উদ্বোধনও করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আবছারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পর্যটন এলাকা সমুদ্রসৈকত ঘিরে এমন সিদ্ধান্তকে পর্যটন বিরোধী মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের ফোন করে বিভিন্ন স্তরের মানুষ। সরকারি দলের নেতাদের অনেককে এ নিয়ে সমালোচনামূলক কথা বলতে শোনা যায়। অবশেষে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জানান, জেলা প্রশাসন পর্যটকদের মতামতের উপর সবসময় শ্রদ্ধাশীল। বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের মধ্যে অনেকে অনুরোধ করেছেন নারী ও শিশু পর্যটকের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন থাকলে ভালো হয়। সেই বিবেচনায় বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে পৃথক এলাকা চিহ্নিত করে নারী ও শিশুদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এক্সক্লুসিভ জোনে যাদের ইচ্ছা হবে যাবে, অন্য পর্যটকরা তাদের ইচ্ছেমত ঘুরবেন।
তিনি জানান, ‘এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। প্রচারিত সংবাদের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনায় বিষয়টি নিয়ে বিরূপ মতামত পাওয়া গেছে। পর্যটকদের মতামতের উপর সমবসময় আমরা শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং পর্যটকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে নারী ও শিশুদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন চালু রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হলো।’
এদিকে, জেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায় সচেতন মহল। তারা বলছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে আলাদা জোন হতে পারে না। দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা একে অপর থেকে আলাদা হয়ে কিংবা স্বামী থেকে স্ত্রী আলাদা হয়ে সমুদ্রস্নান করবে, এতে নিরাপত্তার চেয়ে অনিরাপত্তার আশঙ্কা ও ঝুঁকি বেশি থাকে।