parbattanews

দেশের ভূখণ্ডে কোন সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের ভূখন্ডে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসীদের জায়গা হবে না। দলবেঁধে এদেশে রোহিঙ্গাদের পাড়ি জমানোর দৃশ্যটি আমাদের খুব বেশি পীড়া দেয়। ইতোমধ্যে মিয়ানমার সরকারকে দুই দফায় তালিকা দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বার বার শর্তের পর শর্ত দিয়ে যাচ্ছে।

১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৪টায় হেলিকপ্টারযোগে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-৪-এ রোহিঙ্গা মাঝিদের সাথে ঘন্টাব্যাপী মত বিনিময়কালে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দৈত্য দানবের ন্যায় ভাসানচরের ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। এদিকে ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারাও দলে দলে ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক। তবে মিয়ানমারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে এদেশে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংস করার পায়তারা চালাচ্ছে।

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে দুই দফায় ৩ হাজার ৬৪৬ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এখন তৃতীয় দফায় আরও কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ভাসানচরে যেতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের উৎসাহ জোগাতে ক্যাম্পের মাঝিরা বড় ভূমিকা রাখছেন। নোয়াখালীর ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা আছে সরকারের।

দেখা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে বেলা দেড়টার আগেই ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে হাজির হয়েছেন উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরের অন্তত অর্ধশতাধিক মাঝি। তাদের কয়েকজন রোহিঙ্গা মাঝি বলেন, বৈঠকে তারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নিজেদের মনোভাবের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবেন। পাশাপাশি ভাসানচরে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজার ক্যাম্পে আসার আগে আজ সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে নামেন। সেখানে কক্সবাজার থেকে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন ও ভাসানচর থানা উদ্বোধন করেন।

সূত্র জানায়, উখিয়ার বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার রাত আটটায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা-সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ বৈঠকেও ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের বিষয় ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ গুরুত্ব পায়।

এ সময় সাথে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল উদ্দিন, আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, চট্টগ্রামের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন মো. মামুনুর রশীদ, রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে পালিয়ে আসে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।

Exit mobile version