parbattanews

ধর্ষিত উপজাতি তরুণী বিয়ের দাবিতে কাউন্সিলর’র বাসায়

ধর্ষণে শিকার হয়ে উপজাতি এক ত্রিপুরা তরুণী বিয়ের দাবিতে ১৫দিন ধরে অবস্থান করছে লামা পৌর সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাকেরা বেগমের বাসায়। তবে অভিযুক্ত ছেলেকে আত্মগোপনে পাঠিয়ে ঘটনা টাকায় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন ওই কাউন্সিলর।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুর দুইটার দিকে এখবর জানতে পেরে সেই তরুণীর পাশে অবস্থান নিয়েছে লামা থানা পুলিশ। ওই তরুণীর দাবি কাউন্সিলর সাকেরা বেগমের ছেলে আলী হায়দার প্রকাশ সাগর এর সাথে বিয়ে ছাড়া এই বাড়ি ছাড়ছে না সে। আর এই বিয়ের জন্য সে নিজ ধর্মত্যাগ করে প্রয়োজনে ধর্মান্তরিত হতেও রাজি।

এর আগে এদিন দুপুর সাড়ে বারটার দিকে ওই তরুণীর গর্ভাবস্থা জানতে তাকে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায় কাউন্সিলর সাকেরা। তার গর্ভে সন্তান আছে কিনা সেখানে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ফের বাসায় নিয়ে আটকে রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে।

এদিকে এই ধর্ষণের খবর জানাজানি হওয়ার পর ওই তরুণীর মা-বাবা’সহ পুরো পরিবারকে সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানরকার পাড়াবাসী।

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লামার স্থানীয় প্রতিনিধি আজহা ত্রিপুরা জানান, বিয়ে বহির্ভূত ধর্ষণের শিকার হলে সমাজের আইন অনুযায়ী পাড়া পবিত্র করতে ধর্ষক দু’টি শুকর ও মদকেনার প্রয়োজনীয় টাকা জরিমানা দিতে হয়। যে শুকরের রক্ত ও মদে উৎসব করে ধর্ষণের গ্লানি মুছে পাড়াকে পবিত্র করা হয়। না হয় ওই মেয়েকে পাড়ায় আর ঢুকতে দেয়া হয় না। এমনকি তার মা-বাবা’সহ পুরো পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়।

পুলিশকে লিখিতভাবে দেয়া ওই তরুণীর ভাষ্য, উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ে তাদের বসবাস। এনজিওতে চাকরির সুবাধে লামা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নয়াপাড়া এলাকায় কাউন্সিলর সাকেরা বেগমের বাসায় গত বছরের এপ্রিল থেকে ভাড়ায় আছে সে। এই সময়ে ওই কাউন্সিলর পুত্র সাগর বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ৩/৫ বার ধর্ষণ করে তাকে। এবার বিয়ের বিয়ের জন্য চাপ দিতেই ঘটনাটি চারদিকে জানাজানি হয়ে যায়।

ওই তরুণীর বাবা জানান, অন্ত:সত্তার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই কিছু যুবক এক রাতে তার মেয়েকে ওই ভাড়া বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে সে থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় চায়। তবে থানায় আইনের আশ্রয়ের পরিবর্তে উল্টো হুমকী নেমে আসে তার জীবনে। সাগর’র মা সাকেরা’সহ প্রভাবশালী নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত দেন কিছু টাকা নিয়ে ঘটনা চেপে যেতে।

তবে ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, সাকেরা কৌশলে ভুলভাল বুঝদিয়ে মেয়েটিকে আটকে রেখেছেন। চলমান লকডাউনের পর ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েই এই তরুণীকে এলাকা ছাড়া করার ছক করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাউন্সিলর সাকেরা বেগম গণমাধ্যমে কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

উপজাতি এই তরুণীর ধর্ষণ ও বিয়ের দাবিতে কাউন্সিলর’র বাসায় অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।

Exit mobile version