নতুন পর্যটন জোনের সম্ভাবনা : পাহাড়ি নদীর মিতালিতে অপরূপ মানিকপুর

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় মাতামুহুরী নদীর দুই তীরবর্তী প্রকৃতির অপরূপ নান্দনিক সৌন্দর্য্যে গড়ে উঠা পাহাড়ের সাথে নদীর মিতালিতে ভরপুর মানিকপুর। গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্য ঘেরা এ মানিকপুরকে ঘিরে নতুন পর্যটন জোনের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বান্দরবানের আলীকদমে উৎপত্তি হওয়া প্রমত্তা মাতামুহুরী নদী চলার পথে মানিকপুর পাহাড়ের পাদদেশে অসম্ভব মিতালীতে মেতেছে। নিত্যদিন সকালে ও বিকালে পাহাড় ঘেরা নদীর নৈগর্সিক সৌন্দর্য অন্যদিকে পাহাড়ের নীচে বেড়ে চলা মাতামুহুরী নদীর বিশাল জলরাশি গোধুলি বেলায় ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে অন্যরকম দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

আর পাহাড় নদীর এই মিতালী স্বচক্ষে উপভোগ করতে এখন প্রায় প্রতিদিন মানিকপুর এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমন পিপাসু নারী-পুরুষ থেকে সব বয়সের মানুষ।

অপরূপ মানিকপুরকে ঘিরে যখন নতুন পর্যটন জোনের উজ্জল সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছিল ঠিক তখনই ভ্রমণ পিপাসু মানুষের আগ্রহ দেখে প্রকৃতির অপরূপ মিতালী স্বচক্ষে দেখতে ওই এলাকাটি পরিদর্শনে যান চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ। সাথে ছিলেন চকরিয়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের একাধিক সদস্য এবং তাদের পরিবার সদস্যরা।

সরেজমিন পর্যটন জোনের সম্ভাবনা দেখে গত অক্টোবর মাসের চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামসুল তাবরীজ পাহাড় নদীর মিতালীতে ভরপুর সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নকে পর্যটন জোন ঘোষনা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম।

ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, অপরূপ মানিকপুরকে ঘিরে নতুন পর্যটন জোনের উজ্জল সম্ভাবনা দেখায় সম্প্রতি মানিকপুর পর্যটন স্পট পরিদর্শনে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহোদয়। পরে বিষয়টি আমি চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করি এবং মানিকপুরকে পর্যটন কেন্দ্র বা পর্যটন জোন ঘোষনার দাবি জানাই। সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে ইউএনও মহোদয় সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নকে নতুন পর্যটন জোন হিসেবে ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তিনি আগামী দুই মাসের মধ্যে সুরাজপুর মানিকপুরকে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ উপযোগী করার আশ্বাস দেন।

চকরিয়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের সঙ্গে নতুন পর্যটন জোন মানিকপুর ভ্রমনে গিয়েছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার। তিনি বলেন, প্রকৃতির হাতের পরশে সাজিয়ে তোলা পাহাড় এবং নীচের অংশে বেড়ে চলা মাতামুহুরী নদীর বিশাল জলরাশির অপরূপ সৌন্দর্য্য এক অন্যরকম অনুভূতি। বিশেষ করে গোধুলি বেলায় ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতি ‘একেক জায়গায় একেক রূপ ধারণ করে। পাহাড়ের নীচে বয়ে গেছে নদী। আবার চারদিকে গ্রামীণ অবয়বে ক্ষেতে কাজ করছেন চাষিরা, আর ওপরে পাহাড়ে সৌন্দর্য– সবমিলিয়ে দেখতে বেশি ভালো লেগেছে। এখানে দুর্লভ অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখেছি। এর সৌন্দর্য বলে বোঝানো যাবে না। পাহাড় আর নদীর মিতালী দেখে মনের ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছে।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বললেন, মানিকপুরের পাহাড়ের সঙ্গে নদীর মিতালী এবং নদীর জেগেউঠা চরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখলাম। এ অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। এখানকার রাস্তাঘাট, প্রকৃতি ও আবহাওয়া সবই অনেক সুন্দর। তবে থাকা-খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো লাগতো।’

তিনি বলেন, মানিকপুরের এই দর্শনীয় পর্যটন জোনকে সত্যিকার অর্থে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য আরো আকর্ষনীয় করে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। সেই ব্যাপারে আমাদের পরিকল্পনা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, চকরিয়া, পর্যটন জোন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন