নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মর্টার শেল বিস্ফোরণের ব্যাপক শব্দ


বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন সীমান্তের পশ্চিমে মর্টার শেলের ব্যাপক শব্দে প্রকম্পিত হয় নিকুছড়িসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টায় সীমান্ত ঘেঁষা রাখাইনের পুরানমাইজ্জায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার রাতে আর পূর্বে সাপমারাঝিরি ভেতরের ছড়ার আগা দিয়ে ৪৬ জনসহ ১২ ঘণ্টায় আসল ৪৭ জান্তা বাহিনীর নিরস্ত্র যোদ্ধা। যারা বিজিবি হাতে আত্মসমর্পণ করেছে। এর আগে সকালে ঘুমধুম রেজুপাড়া বিওপি বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে ১ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য। বুধবার বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের ৪৪ নম্বর পিলার এলাকায় পালিয়ে আশ্রয় নেয় আরো ১ জান্তা বাহিনীর সদস্য। এ নিয়ে ২ দিনে আশ্রয় নেয় ৬৫ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য। এর ২ দিন আগে সীমান্তের ঘুমধুম ও হোয়াইকং পয়েন্ট দিয়ে আসে ১৬ জন। এভাবে ৪ দিনে জান্তা বাহিনীর ৮১ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। যাদেরকে এখন বিজিবি স্কুল রাখা হয়েছে।
পালিয়ে আসা প্রত্যকে যোদ্ধার অধিকাংশ অস্ত্র রাখাইন বিদ্রোহী আরকান আর্মি ও বিদ্রোহী আরএসও’রা ছিনিয়ে নিয়েছে অভিযোগ পালিয়ে আশ্রয় নেয়া জান্তার সদস্যদের। তারা যখন অসহায় তখন সুযোগ নিয়ে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে তারা।
তারা আরো জানান, বর্তমানে আরো শতাধিক জান্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অপেক্ষায় রয়েছে।
সীমান্তের গোলাগুলি
মিয়ানমার অংশে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত জুড়ে এখান গোলাগুলি মামুল ব্যাপারে দাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন চাকঢালা সীমান্তের বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সাপমারা ঝিরির বিপরীত পয়েন্টসহ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দও শুনা গেছে।
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী একদল প্রত্যক্ষদর্শী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে ৪৪ পিলার এলাকায় জিরো পয়েন্টে জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা নিয়ে গোলাগুলি শুরু হয়। চলে ৩’শ রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা। এ ঘটনায়
বিদ্রোহী আরএসও’র ২ সদস্য মারা যায়।
বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএসওর (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অব অর্গনাইজেশন) এর এক নেতা স্বীকার করেন। তবে তিনি নিহতদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ৪৬ জন জান্তা বাহিনীর যোদ্ধা নিরস্ত্র পালিয়ে আসে। তাদেরকে নাইক্ষংছড়ি সদরের বর্ডার গার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়।
বিজিবি সূত্র গুলো জানায়, মঙ্গলবার রাত দেড়টায় এদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে নিয়ে আনা হয়। যাদের সংখ্যা ৪৬ জন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের জামছড়ি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দিয়ে মঙ্গলবার রাতে নতুন করে আরও ৪৬ জন বিজিপি সদস্য আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে ঢুকেছে আরো ১৬ জন। ৪ দিনে মোট ৮০ জন জান্তা সদস্য এপারে পালিয়ে আসে। বুধবার দুপুরের পরপর জান্তা বাহিনীর ১ আহত সদস্য পার হয়ে চাকঢালা এলাকায় আশ্রয় নিযেছে।
এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন জান্তা বাহিনীর সদস্য। যাদেরকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।