নানা নাটকীয়তার পর নাইক্ষ্যংছড়ির কলেজ অধ্যক্ষকে ছুটিতে পাঠাল প্রশাসন

fec-image

নিজের অধ্যক্ষ পদ বাচাঁতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী এম এ কালাম সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ মো. জাফর আলম। গত দুই সপ্তাহ ধরে নানা নাটকীয়তার পর এবার কলেজের শিক্ষার্থীদের উষ্কে দিয়ে মাঠে নামানোর চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে তাঁর। অভিভাবক ও ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে তা প্রতিহত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া সরেজমিন কলেজ ক্যাম্পাস এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কলেজ অধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে কলেজ অধ্যক্ষ কর্তৃক সৃষ্ট নানা বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আগামী এক সপ্তাহর জন্য অধ্যক্ষকে ছুটিতে পাঠিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে কিছু শিক্ষার্থী মিছিল বের করে। এসময় জাহিদ নামে এক ছাত্র কাগজে লিখা পড়ে শ্লোগান দেন। খবর পেয়ে স্থানীয় অভিভাবক ও রাজনৈতি দলের নেতারা তাদের সরিয়ে দেন। এছাড়াও কলেজ অধ্যক্ষ মো. জাফর আলমের সাথে অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্য, একক সীদ্ধান্তে কলেজের মালামাল ক্রয় ও নিকটাত্মীয়দের কলেজে নিয়োগসহ নানা অভিযোগ তোলে সংশ্লিষ্ট মহল। এরপর থেকে কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবী উঠে বিভিন্ন মাধ্যমে।

নাইক্ষ্যংছড়ি কলেজের একাধিক ছাত্র-ছাত্রী জানান, মিছিল বা আন্দোলন বিষয়ে তারা আগে থেকে কিছু জানতেন না। মঙ্গলবার সকালে কলেজে আসার পর কিছু ব্যানার ও ফেস্টুন প্রত্যেকের হাতে ধরিয়ে দেন কলেজ অধ্যক্ষ। মিছিলে কি স্লোগান হবে তাও লিখে দেওয়া হয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছেন নিজের স্বার্থে। আগেরদিন একটি লিখিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কলেজ অধ্যক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করেছিলেন। পরে তাদের মিছিলে যেতে বাধ্য করা হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নুরুল আবছার সোহেল ও ছাত্রদল সভাপতি জিয়াউল হক জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি কলেজ অধ্যক্ষ এখনো সেই আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের প্রেসক্রিপশনে চলছে। নিজের চেয়ার বাচাঁনোর জন্য ১ম ও ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের উষ্কানি দিয়ে ব্যবহার করছে। যেটি ইউএনও’র তদন্তকালীন সময়ে ছাত্রদের জবানবন্দিতে প্রমাণিত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলমান পরিস্থিতির দায়ভার অধ্যক্ষকে নিতে হবে বলে হুশিয়ারী দেন নেতৃবৃন্দ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ফখরুল আজাদ জানান, কলেজ অধ্যক্ষ প্রায় সময় সরকারী কলেজের প্যাড, সিল ব্যবহার করে নিজের স্বার্থের জন্য অন্যকে হুমকি দেন। সম্প্রতি তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থান করায় কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, কলেজে নানা বিশৃঙ্খলার জন্য অধ্যক্ষকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন