নানিয়ারচরে আ’লীগের সম্মেলন পণ্ড, জেলা পরিষদ সদস্য ত্রিদীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ

fec-image

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন পণ্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালে মারপিটের কারণে সম্মেলনটি পণ্ড হয়ে যায়।

সম্মেলনটি পণ্ড হওয়ার পিছনে রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য ও নানিয়ারচর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ত্রিদীব কান্তি দাশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুড়েছে আ’লীগের একাংশের নেতৃবৃন্দ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসলামপুর মাদ্রাসা কক্ষে বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। যথারীতি সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, নানিয়ারচর উপজেলা আ’লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য আব্দুল বারি শেখ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি পদে পদপ্রার্থী ছিলেন তিনজন। তারা হলেন, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি নুরুল হক, বুড়িঘাট ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সোবহান এবং ৮নং ওয়ার্ড আ’লীগের সদস্য মো.আফজাল।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন দু’জন। তারা হলেন, ইদ্রিস লিডার এবং ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য মো. ফারুক। সম্মেলন পরিচালনা করেন, বুড়িঘাট ইাউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. হোসেন আলী। এসময় একই ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ফারুক হাওলাদার, যুগ্ম সম্পাদক মো. তেজামুলসহ অন্যন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আ’লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা মো. ফারুককে নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। দলের সংবিধান অনুযায়ী যুবলীগের কমিটি থেকে ইস্তফা না দিয়ে আ’লীগের সম্মেলন পদপ্রার্থী হতে পারে না ফারুক।
কিন্তু দলীয় সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ফারুক গ্রুপের সমর্থক বুড়িঘাট ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. কুদ্দুসের নেতৃত্বে ১০-১২জনের একটি দল সম্মেলন অতর্কিত হামলা চালিয়ে সম্মেলন পণ্ড করে দেয় এবং এতে সম্মেলন পরিচালনাকারী বুড়িঘাট ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. হোসেন আলীকে মারপিট করে।

এ ঘটনায় সম্মেলনের প্রধান অতিথি আব্দুল বারী শেখ, সভাপতি পদপ্রার্থী ইদ্রিস লিডার, বুড়িঘাট ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি প্রার্থী ফারুক হাওলাদার, নানিয়ারচর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রুবেল এবং বুড়িঘাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন আহত হন।

এ বিষয়ে বুড়িঘাট ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সম্মেলন পরিচালনাকারী মো. হোসেন আলী জানান, দলের নির্দেশ এবং সংবিধান মেনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ৮নং ওয়ার্ড আ’লীগের সম্মেলনের আয়োজন করি। যথারীতি প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী যুবলীগের সদস্য মো. ফারুক দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক হতে পারবে না জেনে তার সমর্থকদের দিয়ে সম্মেলন পণ্ড করে মারপিট করে। এতে প্রধান অতিথিসহ অনেকে আহত হন।

এ ঘটনার জন্য তিনি রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ত্রিদীব কান্তি দাশকে দায়ী করেছেন। তার উস্কানীতে নাকি এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এজন্য তিনি ত্রিদীব কান্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।

উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব বলেন, আমি দলের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি প্রিয়তোষ দত্ত, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন তালুকদার, উপজেলা আ’লীগের সদস্য আব্দুল হক এবং আবুল হোসেনের সহযোগিতায় এ হামলা পরিচালনা করা হয়। আর হামলার পিছনে পরোক্ষ নেতৃত্ব দিয়েছেন, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ত্রিদীব কান্তি দাশ।

আ’লীগের এ সম্পাদক আরও বলেন, হামলার ঘটনার খবর আমি যখন পায় তখনি সভাপতি ত্রিদীব বাবুকে একাধিকবার ফোন করতে থাকি। কিন্তু তিনি সাড়া দেয়নি। ঘটনার অনেক সময় পার হওয়ার পর একবার ফোন রিসিভ করে মামলা করার জন্য বলে ফোনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের সদস্য ও নানিয়ারচর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ত্রিদীব কান্তি দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি উপজেলা আ’লীগের সভাপতি। সকলে আমার লোক। আমি কেন এ ঘটনা ঘটাতে যাবো। সামনে উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে একটি গ্রপ তাদের ফায়দা লুটে নিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন