নাফ নদ থেকে তিন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি


টেকনাফের হ্নীলার লেদা এলাকার নাফনদী থেকে তিন বাংলাদেশিকে নৌকাসহ ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। তাঁরা হলেন সিদ্দিক হোসেন (২৭), রবিউল আলম (২৭) ও মাহমুদ হোসেন (৩০)। তাঁরা তিনজনই টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব লেদার।লামার পাড়ার বাসিন্দা।
সোমবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা–সংলগ্ন নাফনদী থেকে তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টানা ১১ মাস সরকারি জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের পর গত ৮ ডিসেম্বর মংডু টাউন দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। এরপর নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির তৎপরতা বেড়েছে।
সেই সঙ্গে বেড়েছে নাফ নদী থেকে বাংলাদেশি জেলেদের ট্রলারসহ অপহরণের ঘটনাও। জেলেরা এসব ঘটনার জন্য আরাকান আর্মিকে দায়ী করেছেন।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী বলেন,সোমবার দুপুরের দিকে যে তিনজনকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে, তাঁরা জেলে নন। কেন তাঁরা নাফনদীতে গেছেন, তা নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি।
তবে স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে ওই তিনজন নৌকা নিয়ে নেমেছিলেন। আরাকান আর্মি তাঁদের দেখতে পেয়ে গুলি চালায়। পরে তাঁদের ধাওয়া করে আটক করে নিয়ে যায়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী ছাড়াও স্থানীয় জেলেরা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হুদা স্থানীয় জেলেদের বরাত দিয়ে বলেন, নাফ নদী থেকে তিনজনকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে রাখাইন রাজ্য দখলের পর আরাকান আর্মি নাফ নদীতে মাছ আহরণসহ নৌকা চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। এর মধ্যে নাফ নদী থেকে নৌকাসহ তিনজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে তাঁরা জেলে, নাকি মাদক কারবারি, সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ, ওই এলাকা দিয়ে প্রচুর পরিমাণে মাদকের বড় বড় চালান জব্দের ঘটনা ঘটেছে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২০৪ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জনকে ফেরত আনা হয়েছে।