parbattanews

নিভে গেলো পাহাড়ের আরো একটি প্রদীপ: ভান্তের কর্মজীবন

পাহাড়ের অন্যতম বৌদ্ধ ভান্তে উপঞঞাজোত মহাথেরো (উচাহ্লা ভান্তে) আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ৬৬বছর বয়সে এই উজ্জল আলোকর্তিকা নিভে গেলো। বৌদ্ধ শাসনের ধারক ও বাহক, বাংলাদেশে সদ্ধর্মের পুনঃজাগরণের প্রতীক এবং ধর্মের অন্যতম পরিচর্যাকারী ছিলেন তিনি। কৃতিত্বভরা ছিল তার সারাটা জীবন। ভান্তের মৃত্যুর খবর বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও ভক্তদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সোমবার(১৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার সময় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বৌদ্ধ ধর্মের আনুসারে তারঁ ৩১ওয়াহ এবং ৬৫ বছর বয়স হয়েছিলো। এসময় দেশ বিদেশে অসংখ্য শিষ্য, দায়ক-দায়িকা, ভিক্ষু সংঘ ও বান্দরবানে শোকের ছায়া নেমে আসে।গত শুক্রবার ১০ এপ্রিল বাম হাত প্রচুর ব্যাথা অনুভব হলে চট্টগ্রাম ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা অবনতি হলে আইসিইউতে লাইফ সার্পোটে ছিলেন।

উ চা হ্লা ভান্তে

এদিকে বান্দরবান খিয়ং ওয়া কিয়ং বিহারের অধ্যক্ষ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু উপঞঞাজোত মহাথেরোর পর প্রয়ানে বিভিন্ন মহল শোক প্রকাশ করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, বাংলাদেশ বুড্ডিশ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সুনন্দনপ্রিয় ভিক্ষুসহ বিভিন্ন মহল শোক জানিয়েছেন।

দি ওয়ার্ল্ড বৌদ্ধ শাসন সেবক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা এবং শোয়েয়াংগ্য গইং বাংলাদেশ এর সর্বোচ্চ গুরু, খিয়ং ওয়া কিয়ং রাজবিহারের অধ্যক্ষ, নন্দগ্রী জাদি, রাম জাদি, স্বর্ণ জাদি, কিয়কমলং জাদিসহ ছয়টি বৌদ্ধ ধাতু জাদির প্রতিষ্ঠা করেন উপঞ্ঞা জোত মহাথেরো।

উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালের ২২ ডিসেম্বর বান্দরবানে বোমাং রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি, ১৯৮২ সালে এলএলএম এবং ১৯৮৩ সালে বিসিএস পাস করেন। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে তিনি সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ শুরু করলেও ১২ বছর কর্মজীবনে ছিলেন। পরে ১৯৯৫ সালের ৭ জুন চিংম্রং বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উপন্ডিত মহাথের কাছে প্রব্রজ্যা গ্রহণ (গৃহজীবন ত্যাগ) করে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হন। এর ছয় মাস পরই পবিত্র মাঘী পূর্ণিমার দিনে তিনি উপসম্পদা (ভিক্ষুত্ব) গ্রহণ করেন।

এদিকে, মৃত্যুর পর বৌদ্ধ ভিক্ষু উচহ্লা ভান্তের মরদেহ চট্টগ্রাম থেকে রাউজানের খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করার পর বুধবার মরদেহ বান্দরবান নিয়ে আসার কথা রয়েছে।

Exit mobile version