কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া বাজার পাড়ায় শ্বশুর বাড়িতে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্বামীহারা গৃহবধূ তছলিমা আক্তার (২৮)। তার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। প্রতিনিয়ত তাড়া করছে হুমকি আর মৃত্যুভয়। দিন যেমন তেমন, রাত যায় আতঙ্কে। একমাত্র মেয়ে তাজকিয়া আমান আবির স্থানীয় একটি কেজি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
পিতৃহীন অবুঝ এই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়েও উৎকণ্ঠা কাটছে না। রয়েছে চরম উদ্বেগ। কোনমতে দিন কাটছে তছলিমার। থানায় গিয়েও প্রতিকার পাননি। ইতোপূর্বে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিরা পার পেয়ে গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা ম্যানেজ। তাই চার্জশিট দিয়েছে ভিন্ন কিছু লোকের নামে, যাদেরকে খোদ বাদীও চিনেন না। কালো টাকা আর বেপরোয়া ক্ষমতায় আসামিদের কব্জায় পুলিশও। এসব কিছুর মাঝেও শান্তিতে ঘুমোতে পারছে না গৃহবধূ তছলিমা আক্তার। পিতৃহীন একমাত্র মেয়ে সন্তান নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাত্রা তছলিমার। এখন ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত ও আপ্লুত কণ্ঠে এসব কথা তুলে ধরেন তছলিমা আক্তার।
তিনি বলেন, বিয়ের মাত্র দুই মাসের মাথায় সংসারের প্রয়োজনে সৌদি আরব পাড়ি দেন স্বামী আমান উল্লাহ। সেখানেই করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন স্বামী।
২০২১ সালের ৬ এপ্রিল সকালে শ্বশুরবাড়িতে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। লুট করে নিয়ে যায় স্বর্ণলংকার। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন তছলিমা আক্তার। যার থানা মামলা নং১৩/২১।
মামলায় ভাসুর মৃত ছৈয়দ নুর সওদাগরের ছেলে মুহাম্মদ ফয়সাল, পুত্রবধূ রুমি আকতার, ভাসুর মৃত নুরুল হুদার স্ত্রী মরিয়ম খাতুন প্রকাশ মোরশিদা, দেবর মৃত মনির হোসেনের ছেলে মুহাম্মদ সাইদ, স্ত্রী আয়েশা ছিদ্দিকাকে আসামি করা হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা।
পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, মামলার তিন নম্বর আসামি আয়েশা সিদ্দিকার মেয়ে সুমাইয়া ছিদ্দিকাকে ৫নং সাক্ষী উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এজাহারে লিখিত মূল আসামি ৫ জনকে বাদ দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া চার আসামিকে চেনেন না বাদী।
পরে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।
প্রকাশ্য দিবালোকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত আসামিদের বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না বাদী ও এলাকাবাসী। ঘটনার সঠিক প্রতিকার চান ভিকটিম তছলিমা আক্তার।