parbattanews

নিয়ম মানছেনা কাউখালীর চীন ফেরত রীতা:করোনা আতঙ্কে ভুগছে সবাই

কাউখালীর ঘাগড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চন্দ্র বিকাশ চাকমার মেয়ে রীতা চাকমা (২৫)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে কাজের সন্ধানে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন চীনে।
গত বছর থেকে চীনজুড়ে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করার পর ঐ দেশে থাকা বাংলাদেশীরা ক্রমান্বয়ে দেশে ফিরতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রীতা গত ১২ মার্চ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে সরাসরি চলে আসেন রাঙামাটির কাউখালীতে।
সব নিয়ম কানুন মেনে নিজ ঘরে হোম কোয়াইরেন্টাইনে থাকার শর্তে বাাড়ি ফিরে আসলেও কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করছেনা রীতা। বাড়ি ফেরার পর থেকে আত্মীয়স্বজন এমনকি হাটবাজার বাজারসহ জনবহুল এলাকাগুলোতে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রীতার এমন আচরণে রীতিমত ক্ষুদ্ধ জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন।
পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতীদের বিরাট একটি অংশ চীন, মালয়েশিয়া, ভারত মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। এরইমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশ চীনে থাকা অনেক নাগরিক বিমানবন্দর পাড়ি দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে প্রবেশ করলেও এদের মনিটরিং বা পরীক্ষা নীরিক্ষা করার মতো আধুনিক কোন প্রতিরোধ ব্যাবস্থা এ অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে নেই।
এমন অসহায়ত্বের কথাও জানালেন কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা সুইমিপ্রু রোয়াজা।
পুরো উপজেলার মানুষের জন্য ১০ বেডের  একটি মাত্র হাসপাতাল। জরুরী পরিস্থিতি দুরে থাক স্বাভাবিক পরিস্থিতি সামাল দিতেই এ হাসপাতাল হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে চীন ফেরত রীতা চাকমার খোঁজ নিতে মেডিকেল টিম নিয়ে রীতার বাড়িতে গেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমকর্তা । অথচ মেডিকেল টিমের কারো কাছেই নেই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস বা তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মতো প্রয়োজনী কোন যন্ত্রপাতি। ফলে মাস্কের পরিবর্তে নিজের ওড়না পেছিয়েই বেড়িয়ে পড়লেন এ স্বাস্থ্য কমকর্তা। এমন পরিস্থিতিতে খোদ মেডিকেল টিমের সুরক্ষা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
চীন ফেরত রীতাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যারা ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শতরূপা তালুকদার।
তিনি জানান, রীতাসহ আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আর কেউ বাড়ি ফিরে থাকলে তাদের বাধ্যতামূলক নিজ ঘরে হোম কোয়াইরেন্টাইনে থাকতে হবে। এ আদেশ কেউ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ শেষ হলেও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনতামূলক কোন কার্যক্রম এখনো দৃশ্যমান নয়। তাছাড়া গত কয়েক মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে কি পরিমাণ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন এমন কোন তথ্যও কারো কাছে জানা নেই। ফলে পুরো বিষয়টা নিয়ে একধরণের ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলের বৌদ্ধ ভিক্ষু, বড় বড় ধর্মীয় নেতাসহ অনেক সাধারণ উপজাতীদের চীন যাতায়াত রয়েছে। এদের মধ্যে বেশীরভাগ বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাই মায়ানমার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে থাকে। ফলে তাদের চিহৃিত বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মতো কোন সুযোগ থাকছেনা।

গত কয়েক মাসে এসব আক্রান্ত দেশ থেকে কারা কারা যাতায়াত করেছে তাও প্রকাশ্যে আসছেনা। এমন পরিস্থিতে পার্বত্য অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

দূর্গম অঞ্চলজুড়ে অনুসন্ধান করে বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে না পারলে এ অঞ্চল সাধারণ মানুষের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।

Exit mobile version