parbattanews

খাগড়াছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য : জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

0,,15626993_303,00

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি॥

পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ির নিকট হস্তান্তরিত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য হচ্ছে। এক পক্ষের কাছ থেকে নয় বরং ত্রিমুখী ঘুষ বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে প্রার্থীরা। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগের নীতিমালা উপেক্ষা করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার তিনটি স্তরেই নানামূখী হয়রানী ও ঘুষ বাণিজ্যের শিকার হয়ে অবশেষে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছে ভূক্তভোগীরা। এনিয়ে গত তিনদিনে খাগড়াছড়ি যুগ্ম জেলা জজ আদালতে চারটি মামলা দায়ের করলে আদালত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে আগামী ৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ জারী করে।

অনুসন্ধানে জানাযায়, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের স্বারক নং ৩৮.০০২.০১৫.০০.০০.০২৪.২০১০ তাং ৯ডিসেম্বর/১২ এবং সংশোধনী নীতিমালা ২০১৩ মূলে খাগড়াছড়ি জেলার আটটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করে পার্বত্য জেলা পরিষদ।  নীতিমালা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা কমিটি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নীতিমালা অনুযায়ী একজনকে প্রথম স্থান অধিকারী করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দুইজনকে  অপেক্ষমান তালিকায় রেখে বিধি মোতাবেক নিয়োগ অনুমোদনের জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে প্রেরণ করে সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ। কিন্তু চুড়ান্ত নিয়োগ অনুমোদকারী কর্তৃপক্ষ পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিয়োগ ও বাছাই কমিটির চুড়ান্ত প্রার্থীদের নিয়োগ অনুমোদন না করে পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পরাজিত প্রার্থীদের পক্ষে চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। এতে করে জেলা ব্যাপী আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।

বঞ্চিত প্রার্থীরা প্রতিকার চেয়ে এনিয়ে গত তিন দিনে আদালতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিবাদী করে দেওয়ানী মামলা নং ৫৩/২০১৪, ৫৪/২০১৪, ৫৭/২০১৪ ও ৫৮/২০১৪ সহ চারটি মামলা দায়ের করে।

নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনকারী পানছড়ি হাছাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদের প্রার্থী মোঃ কামাল জানান, জেলা পরিষদে টাকা দিতে পারিনি বলে প্রথম হয়েও আমি চাকুরী পাইনি।

অপরদিকে জেলার মাটিরাংগা উপজেলার গুমতি ও বিরাশি টিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বুলবুল আহমেদ জানান, বিধি মোতাবেক চুড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচিত করে নিয়োগ প্রাপ্তদের নিয়োগ অনুমোদনের জন্য জেলা পরিষদে পাঠানো হলে পরিষদ আমাদের নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ অনুমোদন না দিয়ে পরীক্ষায় তৃতীয় ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীদের নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে তাদের নামে নিয়োগ অনুমোদন করে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাটিরাংগা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান, শুধু জেলা পরিষদ নয় শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনেক স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরাও প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে।

অপরদিকে জেলা পরিষদের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, স্থানীয় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ নিয়োগকারীরা অযোগ্য প্রার্থীদের নিকট থেকে ২ লাখ ৩ লাখ করে ঘুষ নিয়ে ১ম দেখিয়ে নিয়োগ অনুমোদনের জন্য পরিষদে তালিকা প্রেরণ করে। অভিযোগের কারণে পরিষদ যাচাই বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদের অনুমোদনের জন্য তালিকা প্রদান করেছে মাত্র।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও মোটা অংকের ঘুষের অভিযোগ এনে সুমন দেব, মোঃ আবু সুফিয়ান , মোঃ আবু সায়েদ , উচিং মং মারমা, নয়ন বিকাশ চাকমা দূর্জয় ত্রিপুরা বাদী হয়ে  খাগড়াছড়ি যুগ্ন জেলা জজের আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ৫ জনকে আগামী ৫ কার্য দিবসের কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ জারী করে।

 

আরও খবর

রাঙ্গামাটিতে বেসরকারী স্কুলগুলোতে মডেল টেস্টের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

লক্ষীছড়িতে ১৫ মে থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু

রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে ২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের কক্সবাজার বিমান বন্দর পরিদর্শন

কক্সবাজারে গণডাকাতি : অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুট

Exit mobile version