parbattanews

নৃসংশ হত্যাকাণ্ডের শিকার রামুর যুবক হাসান: নদী থেকে দেহের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার

pic  head 1
সোয়েব সাঈদ, রামু(কক্সবাজার):
কক্সবাজার সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় বাঁকখালী নদী থেকে রবিবার উদ্ধার হয়েছে বাহু থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাম হাত। এরআগে গত শনিবার কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ছনখোলা এলাকায় খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে মাথা। উদ্ধার হওয়া দেহের এ দুটি অংশ অনেকখানি বিকৃত হয়ে গেছে। এরপরও অবয়ব আর আকার দেখে পরিবারের সদস্যদের ধারনা এটি মো. হাসানের (২৭) মৃতদেহ।

রামুর যুবক মো. হাসানের এ ধরনের নৃসংশ হত্যাকান্ড নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পর থেকে বাঁকখালী নদীতে সন্ধান মিলছে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া হাসানের মস্তক ও হাত। এ ধরনের নৃসংশ হত্যাযজ্ঞে হতবিহবল হয়ে পড়েছেন, হাসানের স্বজন ও রামুর সর্বস্তরের মানুষ।

হত্যাকান্ডের শিকার তরুন ব্যবসায়ি মো. হাসান রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ার জাকের আহমদের ছেলে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসান বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। ওই দিন থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ ছিলো।

 

এ ঘটনায় হাসানের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে রামু থানা পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেভাজন এক যুবককে আটক করেছে। আটককৃত ওই যুবকের নাম রবি (২৪)। সে রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের শ্রীকুল গ্রামের বাসিন্দা। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তাকে কোর্টে চালান করা হয়েছে।

এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে রামুর সর্বস্তরের জনতার উদ্যেগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটায় রামু চৌমুহনী ষ্টেশনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অবিলম্বে এ ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।

হাসানের বড় ভাই মো. ইসমাইল জানিয়েছেন, সম্প্রতি হাসান সৌদি আরব যাওয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলো। এরই লক্ষ্যে সে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বন্ধক দেয়ার জন্য আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলো। কিন্তু ওইদিন সে ফিরে না আসার পরিবারের সদস্যরা অজানা আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এমনকি ওইদিন থেকে তার মুঠোফোনও বন্ধ ছিলো।

 

তিনি আরো জানান, গত শনিবার পিএমখালী ছনখোলা এলাকায় বাঁকখালী নদীতে একটি মাথা ভাসতে দেখার খবর পান। পরে পুলিশ সেই মাথাটি উদ্ধার করে। গতকাল বাংলাবাজার এলাকায় বাঁকখালী নদী থেকে একটি হাত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ধারনা করেছেন, দেহের এ দুটি অংশ তার ভাই হাসানের।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই শাহ আলম জানিয়েছেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে অবহিত হয়ে পুলিশ নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে একটি মাথা উদ্ধার করেছে। এটি ডিএনও পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, নিহত যুবকের দেহের অন্যান্য অংশগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া সোমবার উদ্ধার হওয়া হাতটিও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

 

মো. হাসানের স্বজনদের ধারনা হয়তো পরিচিত বা সংঘবদ্ধ একটি অপরাধি চক্র অপহরণ করে হাসানের সর্বস্ব লুট করতে গিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে হত্যাকান্ড ধামাচাপা দিতে মৃতদেহ টুকরো-টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। তারা এ হত্যাকান্ডটি রামুতেই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

 

Exit mobile version