parbattanews

নোম্যান্স ল্যান্ডে চীনের প্রতিনিধিদল: স্বদেশে ফিরতে সহযোগিতা চান রোহিঙ্গারা

নো ম্যানস ল্যান্ডে রোহিঙ্গাদের দেখতে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

সেনা নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া নোম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলতে এবং তাদের পরিস্থিতি দেখতে আসেন চীনের প্রতিনিধি দল।

চীনের প্রতিনিধি দলটি রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছে সেখান থেকে সরাসরি সড়কপথে তুমব্রু শূণ্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প যান। ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

চীনের প্রতিনিধিদল নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে জিরো লাইনের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় তাদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নেন, এবং কথা বলেন। এ সময় প্রতিনিধিদলকে নোম্যান্স ল্যান্ডে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত, অবাধ চলাফেরায় স্বাধীনতাসহ মিয়ানমারে ফিরে নিয়ে ক্যাম্পে না রেখে সরাসরি ভিটে বাড়ীতে পৌঁছে দিলে আমরা ফেরত যেতে রাজি।এছাড়া চীন সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল আমাদেন খবর নিতে আসায় চীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি চীন আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু দেশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা কামনা করছি।

চীনের প্রতিনিধিদলকে শূণ্যরেখার আরেক রোহিঙ্গা নেতা মৌলভী আরিফ উল্লাহ বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হলে যারা রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ, শিশুদের হত্যা, ঘুম, নির্যাতন করেছে তাদের বিচার করতে হবে। এই রোহিঙ্গা নেতা আরো বলেন, মিয়ানমার একাধিকবার তাদেরকে ফেরত নেওয়ার কথা দিলেও মূলত: মিয়ানমারে সেই পরিবেশ এখনো তৈরি করতে পারেনি তারা। যার কারণে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে রাজি হচ্ছেনা।

চীনের প্রতিনিধিদল শূণ্যরেখার ৬জন পুরুষ এবং ৬ জন মেয়ের সাথে কথা বলেন। দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে নোম্যান্স ল্যান্ড ত্যাগ করেন তারা। বিকেলে জেলা প্রশাসন এবং ইউএনএইচসিআরের সাথে বৈঠক করবেন চীনের প্রতিনিধিদল।

এ সময় অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দোজা ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, প্রশাসনের লোকজন প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন। রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জনে মিয়ানমার ব্যর্থ হওয়ায় প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের মিত্র চীনের ভূমিকাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে

উল্লেখ্য যে, গত ২০১৭ সালের আগস্টের পরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। তখনকার সময়ে নোম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয় ৫ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা। বর্তমানে বাংলাদেশে নতুন-পুরাতন মিলে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে। যারা উখিয়া-টেকনাফের সাড়ে ৬ হাজার বনভূমিতে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে।

Exit mobile version