নৌযান সঙ্কট, তবু জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে সেন্টমার্টিনবাসী
দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ নেই। খাদ্য গুদাম, চিকিৎসা সেবা, সী এম্বুল্যান্স নেই। আবহাওয়া অফিসের কার্যক্রমও নেই। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো নয়। সবমিলিয়ে দ্বীপের বাসিন্দাদের যানমাল চরম হুমকির মুখে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র আতঙ্ক তীব্রভাবে ভর করেছে টেকনাফের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনবাসীর উপর।
শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে চলছে দ্বীপের বাসিন্দারা। নৌযানের সংকট। তবু জান বাঁচাতে তারা বসতবাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। রেখে যাচ্ছে গবাদিপশুসহ মূল্যবান সহায় সম্বল।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী জয়নাল আবেদীন জানান, স্পিডবোট, মাছ ধরার বোটসহ বিভিন্ন নৌযানে করে শুক্রবার সকাল থেকে অন্তত তিনশত মানুষ টেকনাফে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তার যারা আর্থিক সচ্ছল তারা বিভিন্ন আবাসিক হোটেল নিয়েছেন। অসচ্ছল লোকজন আত্মীয়-স্বজনের বাসা বাড়িতে উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার এবং আজ শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মানুষ সেন্টমার্টিন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।
দ্বীপের আরেক বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, মোখা আসছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
কারণ, সেন্টমার্টিনে নেই কোনো পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র। দ্বীপের চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ নেই। খাদ্য গুদাম, চিকিৎসা সেবা, সী এম্বুল্যান্স নেই। আবহাওয়া অফিসের কার্যক্রমও নেই। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো নয়। সবমিলিয়ে দ্বীপের বাসিন্দাদের যানমাল চরম হুমকির মুখে।
তাই সেন্টমার্টিনের মানুষ নিজে ও নিজের পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্বীপ ছেড়ে নিরাপদ স্থলে ছুটে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ সদরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার ভোর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে চলছে দ্বীপের মানুষজন।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। এর ফলে শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়া অধিদফতর থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়েছে। নৌযানসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।